প্রেম ও বৈরাগ্য

আশিস ভৌমিক

লেখক পরিচিতি

 (জন্ম 5 ই এপ্রিল 1974, গ্রাম -বৃন্দাবনচক , পাঁশকুড়া , পূর্ব মেদিনীপুর ।প্রাথমিক পড়াশোনা গ্রামে ।উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতায় ।সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক ।গৃহ শিক্ষকতার ফাঁকে ফাঁকে সাহিত্য চর্চা । বিভিন্ন লিট্ল ম্যাগাজিনে লিখে চলেছেন ।  প্রথম কাব্যগ্রন্থ “”হিরণ্ময়ী ” । দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ” কালবেলা “।

– বুক ভরে নিই শহরের ঘ্রাণ
হৃদয়ে মেঠো পথ, ফলের বাগান।)

২৭

কবীর কথা :-

বালম আরো হমারে গেহরে 

তুমি বিন দুখিয়া দেহরে।

সবকোই কহোই তুমহারী নারী 

মোকো লাগত লাজবে।

দিলসে নহী দিল লগায়া

তবলগ কৈসা সনেহ রে।

অন্ন ন ভারৈ নীদ ন আরৈ

গৃহ বন ধরৈ ন ধীর রে।

কামিন কো হৈ বালম প্যারা

জ্যোঁ প্যায়াসে কো নীর রে।

হৈ কোই ঐসা পর উপকারী 

পীরসো কহৈ সুনায় রে।

তো বেহাল কবীর ভরে হৈ

বিন দেখে জির জায় বে।।

অনুবাদ:-

প্রিয়তম,এসো মোর ঘরে

তুমি ছাড়া এই দেহমন দুঃখের সাগর 

সবাই বলে আমি সমর্পিতা

মিশে যাই লজ্জায়!

হৃদয়ে হৃদয় না লাগিলে

প্রেমের স্বার্থকতা কোথায়?

অন্ন রুচেনা, ঘুম আসেনা চোখে 

সময় চলে ধীরে ঘরে বা বাইরে।

তৃষ্ণার্তের কাছে প্রিয় জল

নারীর কাছে তুমিই সম্বল।

.

কে আছে এমন পরোপকারী?

প্রিয়তমকে জানাইবে এই হৃদয়ের বারি!

কবীর হয়েছে অধীর ! হায়

বিনা দরশনে প্রান যে যায়!

২৮

কবীর কথা :-

যা তরিবরমেঁ এক পখেরু

ভোগ সরস বহ্ ডালৈ রে।

বাকী সন্ধ লখৈ নহি কেঈ

কৌন ভারসোঁ বোলৈ রে।

দুর্ম্ম ডার তহঁ অতি ঘন ছায়া 

পংছি বসেরা লেঈ রে।

আরৈ সাঁঝ উড়ি যায় সবেরা 

মরম না কাহু দেঈ রে।

সো পংছি মোহ কোই না বাতাবৈ

জো বোলৈ ঘটমাহীঁ রে।

অবরণ বরণ রূপ নহি রেখা

বৈঠা প্রেমকে ছাহীঁ রে।

অগম অপার নিরন্তর বাসা

আরত জাত ন দীসা রে।

কহৈ কবীর শুনো ভাই শাধো 

রহ কুছ অগম কহানী রে।

ওহ্ পংছিকে কৌন ঠৌর হৈ

বুঝো পন্ডিত জ্ঞানী রে।

অনুবাদ:-

এই তরুবরে সে এক অচিন পাখি খানা 

সম্ভোগ আনন্দে নৃত্যে সে হয় মাতোয়ারা 

কেউ জানেনা কোথায় যে তার সাকিন ঠিকানা

কোন্ ভাবের রসে হয়ে আকুল সেটাই অজানা।

.

সেই তরুর শাখায় শাখায় ঘন ছায়াতল

পাখি সেথা করে খেলা নিয়ে আশ্রয় 

সাঁঝের বেলা ফেরে পাখি প্রত্যুষে যায় চলে

মর্ম্ম তাহার কেউ কাহাকেও না বলে।

.

যে পক্ষি ঘটের মধ্যে করিতেছে গান

তাহার কথা কেউ বলেনা আমায়

বর্ণ অবর্ণ রুপ রেখা কিছু বুঝি নাই

সে পাখি বসে আছে প্রেমের ছায়ায়।

.

যেখানে তাহার বাস নিরন্তর অগম্য অপার

কেহই দেখেনা কভু আসা যাওয়া তার 

কবীর বলেন, সে এক অগম্য কথা কোথা তাঁর ঠাঁই

পন্ডিতেরা জ্ঞান চক্ষে বুঝে নেবে তাই।।

দোহা:-

মায়া তো ঠগিনে বানি ঠগত ফিরে সব দেস

জা ঠগ য়া ঠগিনে ঠগি তা ঠগ কো আদেস

অনুবাদ:-

এই মায়া বড় প্রবঞ্চক, ভুলিয়ে দেয় পুরো জগত

এই মায়াকেও যিনি ভুলিয়ে দেন ধন্য সেই প্রবঞ্চক।

(পরবর্তী অংশ আগামী সংখ্যায়)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *