প্রদীপ কুমার দে

ভাঙা চেয়ারে উপবিষ্ট দুর্গা, ভাঙা কাঠামোয় আজ যার আরাধনার এক অনাড়ম্বর আয়োজন  …

উল্টোদিকে আমি।

আলুথালু বেশ। কোঁকড়ানো চুলগুলো রুক্ষ জটাময়। গাল, মুখ, শরীরের চামড়া কুঁচকে শুষ্ক। মলিনতা গিলে খেয়ে নিয়েছে তার অপরূপ সৌন্দর্য। পঁনেরো বয়সেই যে শরীর গ্রামের সকলের এক দৃষ্টিতে নজর কাড়তো তা আজ দূরীভূত। সুন্দর অবয়ব আজ কুৎসিত। ধূলিসাৎ হয়ে গেছে তার অদম্য উচ্ছ্বাস। সারা দেহ পঙ্গুত্ব প্রায়। এতৎ স্বত্ত্বেও তাকে দেখে বুঝে নেওয়া যায় তার অতীতের মহিমান্বিত গরিমা। 

নীল আকাশ এখন আর নেই তার বদলে কালো কালো মেঘে নীলাচলে আগ্রাসন। বৃষ্টির অভাগীনি রুক্ষ মাটি। রুদ্রের তেজ প্রবাহিত তার উষ্ণ আদ্রতায়। যদিও শরৎঋতু চলছে।

গ্রাম ফুলবেরিয়া পূর্ব বর্ধমান, পশ্চিম বাংলা। পুরানো মাটির ঘর। তারই দাওয়ায় ঠাঁই হয় আমাদের। অনেক কষ্টকর ছিল এই মা দুর্গা’র আবাহনীর উপাখ্যান শ্রব‌ণে।

খুঁজে আনা দুটি ভগ্নপ্রায় চেয়ারের এক‌টিতে মোহিনী অন্যটিতে আমি।

মোহিনীকে মাপছিলাম আমি ….

মোহিনী অভ্যস্ত এই ব্যাপারটায়,

—  সে একদিন ছিল। এখন বাসিফুল …

—  তা দেখলেই বোঝা যায় ।

মলিন হাসিতে ভেজাল নেই যদিও কিন্তু তা বড় ক্ষণিকের,

—  জহুরীর চোখ ?

উত্তর দিই,

—  বলতে পারবো না। অনেকে তৃতীয় নয়নের ব্যাখ্যা করে।  আমি হাসি মজা পেয়ে।

—  এত চাউনি আমাকে মেপেছে যে আমি তাদের চোখের খেলা ধরে ফেলি। সেও এক সময় গেছে। এখন তার কিছুমাত্র অবশিষ্ট নেই।

আমি অনুরোধ জানাই

—  সেই সময়ে ফিরে যাই চলুন। প্লীজ একটু কষ্টকর হবে আমি জানি, তবুও একবার প্লীজ …

—  এত শারীরিক কষ্ট প্রতিদিন প্রতিরাত পেয়েছি যে, এটা তার তুলনায় কিছুই নয়।

মোহিনীর মুখে পশ্চিমে সূর্যের ঢলে পড়া আলো মিশে গেছে। ভীষণ ভীষণ সে রূপ সন্ধিপূজোর সন্ধিক্ষণে দেখা হাজারো প্রদীপের চকচকে আলোয় আলোকীয় মুখমণ্ডল, তার কাঁপা ঠোঁট খোলে,

—  জন্মে বাপ মা কেন যে নাম রেখেছিল দুর্গা? অভাবের ঘরে রূপের বাহারি তায় আবার কন্যে।চৌদ্দ বছর কাটলো না, বুক আর নিতম্ব ভারী হয়ে গিয়ে সকলের নজর কাড়লাম। তার উপর সুন্দরী এই বয়সেই একেবার ঋতুমতী হয়ে গেলাম। সে কি উত্তেজনা শরীরের! প্রথমে ভয় মিশ্রিত সংশয়ের পরে যা কৌতূহলের, সঙ্গে বাইরের সুড়সুড়ি দেওয়া আহ্বান। বুঝতে পারতাম সবাই আমায় চাইছে। বুঝতে চেষ্টা চালাতাম ওরা কি চায়? তাই স্বেচ্ছায় ঘনিষ্ঠ দুএকজনের সান্নিধ্যে চলে যেতাম। জানতাম এটা গ্রাম, এখানকার পরিস্থিতি অতোটা নোংরা হবে না। হলো উল্টো আমার বাপের বয়সী লোকেরা আমাকে ঘুগনি পাউরুটি খাইয়ে আমার বুকে, পিছনে হাত দিত, আর বলতো, ‘ কি সুন্দর হয়েছিস রে তুই?’

গ্রামের সব চাইতে বোকা খোঁড়া কচিদা একদিন আমাকে একা পেয়ে ওর হাফপ্যান্ট খুলে দেখিয়ে বলেছিল, ‘ এবার তোরটা দেখা , না হলে ধার থেকে যাবে, শোধবোধ করে নে। ‘

মায়ের খুব ইচ্ছে ছিল বিয়ে দিয়ে দেওয়ার। মা বুঝতে পেরেছিল আকাশে কালো মেঘ জমেছে,  বৃষ্টির সম্ভাবনা কম, আকাশ দেখে তাই মনে হয়,

ঝড় আসছে, দূর্যোগ সামনে উঁকি দিচ্ছে।

বাবা বলতো,

—  বেশি তাড়াতাড়ি করলে, খারাপ হয়ে যাবে। ভালো শ্বশুরবাড়ি না হলে যে মেয়েটার সারা জীবনের দূর্গতির শেষ থাকবে না। আর বছর দুই গেলে আমি কিছু টাকা রাখতে পারবো, আর তখনই …

মা বোঝাতে চাইত,

—  আকাশ দেখেছো? বিপদ হতে পারে।

বাবা অজুহাত দেখাতো,

—  নিজের দরজায় আগল দাও, দুর্যোগ বাইরে ঘুরে, ফিরে যাবে।

দুনিয়া এখন অন্যরকম। অরণ্যে আর বন্যরা থাকে না, লোকালয়ে বেরিয়ে আসে। গ্রামে বহিরাগতদের আগমন আর ফুর্তির আখড়া সহজেই তৈরী হয়ে যায়। আমদের শান্ত গ্রাম মাতব্বরদের চেলা চামুণ্ডায় ভরে গেল। শহর থেকে গ্রামে এসে নোংরামি করার এমন উন্মুক্ত প্রান্তর আর কোথায় আছে?

বুঝলাম অস্তিত্ব রাখা দায়। পথেঘাটে অজানা অচেনা লোক হা করে তাকিয়ে থাকে যেন বাপের জন্মে নারী মাংসের ঢলা দেখেনি। অথচ ওদের জন্ম এক মেয়ের গোপনাঙ্গ দিয়েই হয়েছে। 

রাস্তায় বেরোনো বন্ধ করে দিলাম। মা বুঝতে পারলো। বাবা সারাদিন জমিদারির সেরেস্তার কাজেই বাইরে ব্যস্ত। আমার বন্ধু, পরিচিত মারফত  নানান টোপ চলে এল। 

বিপদ যে শিয়রে তা ঘুণাক্ষরেও টের পেলাম না আমি কিংবা আমার মা।

ছল চাতুরির শিকার হলাম। কেউ কিছু জানলো না আমাকে তরল পানীয়ের সাথে লুঠে নিল। আমি কিছুই বুঝলাম না, কারণ আমি সজ্ঞায়িত ছিলাম না।

জ্ঞান ফিরে চোখ মেলে দিলাম। গরাদ ভেঙে একফালি রোদ বিছানায় আছাড় খাচ্ছে। চোখ খুলতে চাইলেও বুঁজে গেল। আবার যখন চোখ খুললাম তখন দেখি ওই ঘরে একটা আলো জ্বলছে। মাথার কাছে কে যেন চুলে বিলি কেটে দিল। ভাববার চেষ্টা করেও বিফল হলাম। পাশ ফিরে ঘুমে আচ্ছন্ন হলাম।

এই শেষ ঘুম বুঝি আমার জীবনে থেকে চিরতরে বিদায় নিল। এরপর আমার জীবনে রাত ছিল জাগরণের আর অন্যকে খুশী বিলিয়ে জাগিয়ে দেওয়া।

পান ভরা মুখ নিয়ে ফিকফিক হেসে আমায় আদরে ভরিয়ে দিল যে ষাটোর্ধ্ব মহিলা, তার কন্ঠস্বর শুনলাম,

—  ক্যায়া বাত হেয় বেটি? কসুর মত কর, ম্যায় হু না তুর মউসি।

কিছু বলতে গিয়েও পারলাম না। গলা শুকিয়ে কাঠ। মউসি গলায় জল ঢেলে দিল,

—  আউর ডর নেহি, সওব শুখা খতম হো যায়েগা।

অবাক চোখে তাকিয়ে রইলাম, উঠে বসার ক্ষমতা নেই। মউসি সারাদিন খাইয়ে দিল। রাতেও আমার পাশে শুল। কিন্তু পরদিনই আমার ঘোর পুরোপুরি কেটে গেল।

মউসি এসেই আমাকে তুলে স্নান করে নিতে বললে আবার নিজের হাতেই আমার জামা কাপড় টেনে খুলে দিল। বুকে হাত দিল, যৌনাঙ্গ চেপে ধরে জানান দিল,

—  খাসা মাগী! দুসরা এইসা নেহি।

আমার বুঝতে আর কিছুই বাকী রইল না। চোখ ফেঁটে জল বেরিয়ে এল। আমি ভয়ে কাঁটা হয়ে যেতেই মউসি আমার গালে ঠাটিয়ে একটা চড় কষিয়ে দিল। আমি ওর পা জড়িয়ে ধরে বললেম,

—  আমায় ছেড়ে দেন মাসি …

মউসি আমার পাছায় এক লাথি লাথিয়ে বললে,

—  ইতনা সেক্সী বডি লেকে কেয়া করোগী, খানকি কোন বনেগা? আদমীকো কোওন খুশ করেগা?

সেই রাতেই এক ষন্ডামার্কা আদমী আমার ঘরে এল। এসেই আমাকে উলঙ্গ করে দিল। ভীষণ শক্তি তার। আমি তার হাতে পুতুল মাত্র। তারপর ওর শক্ত শরীরের পুরুষাঙ্গ দিয়ে আমার শরীরে খনন কার্য চালালো। আমি যন্ত্রনায় মরে গেলাম। বিছানা রক্তপাত হলেও ছাড় পেলাম না।

কখন জ্ঞান হারিয়েছি জানি না, যখন জ্ঞান এল তখন নীচের শরীর অবশ হয়ে গেছে। যন্ত্রনায় ছটফট করছি। পাশে মউসির গলা শুনলাম, 

—  স্টেরয়েড দে দো, কাদের, আজ ভি রাতমে তুমকো লড়নে পড়েগে। উসকো জলদি লাইনকা আওরত বনানে পড়েগা। বহুৎ কামাই! কেয়া বডি?

রোজ রাতে আমাকে মেয়ে থেকে মাগী বানোনোর কাজ করলো ওই লোকটি। পাশবিক অত্যাচার চালালো যাতে আমি খরিদ্দারকে খুশী করতে পারি। আমার অক্ষত লজ্জাস্থান ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতেই এদের এই প্রচেষ্টা জারি রইল। দুদিন আমি মরেই বেঁচেছিলাম। স্টেরয়েড ট্যাবলেট আমাকে চাঙ্গা করে দিল। তৃতীয় দিন থেকে আমার কষ্ট কিছুটা কমলো। আমার কিছুই করার ছিল না। আমি ওদের হাতে বন্দি হয়েই রইলাম। আমার নতুন নামকরণ হল মোহিনী। খুশী বিলানোই যার ধর্মকর্ম নির্দিষ্ট হল।

মহালয়ার গান কানে এল। বাড়ি ভর্তি মেয়ে, না মাগীরা দিনরাত কাস্টমার নিয়ে নিয়ে ক্লান্ত তবুও পেটের টানে মুখে হাসি লেগেই রইল। কি সাজ কি তার বাহার! পুরুষদের টেনে আনাই লক্ষ্য। খিস্তি কাকে বলে? খিস্তির ফুলঝুরি বয়ে যেত সারাদিন এই অলিন্দে। মউসি টাকা গুনে গুনে, পান চিবিয়ে সময় কাটাতো আর প্রোগ্রামিং করে দিত। অনেক ফোন আসতো আর সেই মতো বেছে বেছে মেয়েদের তাদের বাড়িতে পাঠিয়ে দিত। রাতে হোটেল সাপ্লাই হত। ভোরে মেয়েরা ফিরে চারঘন্টা রেষ্ট পেত। তারপর আবার কাস্টমার নিতে হত। সব্বাই অভ্যস্ত ছিল খুব।

বুঝে গেলাম এবার আমার পালা আসছে। কান্নাকাটি করে লাভ নেই। বুঝে গেলাম আমার ভাগ্য আমায় এখানে টেনে আনলো। আমার নিয়তি!  বেশ্যাবৃত্তি হয়তো আমার কপাল-লিখন!

পুজো আসছে। এদের কথায় মালুম হলাম। আমি লুকিয়ে চুরিয়ে ওদের কথা শুনতাম। একদিন শুনলাম,

মউসি বলছে,

—  এ লেড়কী পুরা মাগী বন গিয়া। যা গতর হ্যায় সব কোহিকো দিমাগ ঘুরা দেগা। পুজাকা টাইম উসকো কাস্টমার দে দো।

কে একজন রাজী হল,

—  জী মাইজি! পুজাকা পহেলা দিনসেই উসকো কাম মে আনেগা।

সেদিন কি দুর্গাষষ্ঠী ছিল ? ভালো বুঝলাম না। দুপুরেই খরিদ্দার ঘরে এসে আমাকে আদর করে আমায় বেশ্যাগিরির জীবনে প্রথম খাতা খুলে দিল।   বাঁধা দেওয়া অর্থহীন।

বাইরে সন্ধ্যায় পুজো শুরু হল। আওয়াজ আসছে আর তখন আমার উপর চড়ে একজন আমার উপর পাশবিক অত্যাচার চালিয়ে তার পুজো শুরু করলো। মনে আছে প্রথম দিনেই আমায় তিনটি খরিদ্দারকে খুশী করতে হয়েছিল।

উল্টোদিকে ভাঙা চেয়ারে বসে আমি যা শুনছি তা আমাকে গরল পান করানোর সামিল। একটা জলজ্যান্ত মেয়েকে মেরে ফেলার এক নিষ্ঠুর কাহিনী। স্বার্থক তার বাপ মার দেওয়া এই দুর্গা নাম, যার অকালেই বোধন হল! 

এই প্রথম মোহিনীর মুখে কৃত্রিম হাসি দেখলাম,

—  আহত হলেন?

— নিশ্চিত। আঘাতজনিত। তবে তা এই ভাগ্যদেবীর!

—  আর শুনবেন না? শেষটা?

—  কি হবে? নির্মম পরিহাস বই কিছু না।

—  আমারও তাই। তবুও বলি …

পলায়ন লজ্জার। অন্য লজ্জার থেকেও কঠিন। তাই চেয়ার আগলালাম। আকাশ বেশ পরিস্কার হয়ে গেছে, এখন যে শরৎকাল। নীল দিগদিগন্তময়। সাদা পেঁজা তুলোয় যেন আকাশ এক শরৎকুমারী! 

—  দুর্বিষহ জীবন শুরুর পর থেকেই অনেক খরিদ্দারকে আমি আনন্দ দিতে থাকলাম। মউসি আমায় খুব ভালোবাসতো। স্পেশাল ব্যবস্থা ছিল আমার জন্য। ভালো লুকানো খাবার আমাকে নিজের হাতে খাইয়ে দিত সে। আমি নাকি ওর লক্ষ্মী! আমার উপচে পড়া শরীরের লোভে ওই মহল্লার সব খরিদ্দার মউসির পায়ে নোট বিলিয়ে দিত। এই নিয়ে অন্য মেয়েরা আমার সাথে শয়তানি করতে ছাড়তো না আর মাসি তাদের যা প্যাদানি দিত তা বলা অনাবশ্যক। কানাঘুষায় অনেক জেনেছি অনেক শুনেছি। কতজনের অবৈধ পেট হতে দেখেছি। নিজেরও হয়েছে। অনেকেই বাচ্চা প্রসবও করে ফেলেছে। তাদের অনেক গেছে জঞ্জালে। অনেক গেছে মানুষের হাতে। মিথ্যা বলবো না আমারও একবার বাচ্চা হয়ে গেছিল। শুনেছি তাকে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। আমি তখন বড় অসহায় তাই নির্মম আর নিষ্ঠুর হয়ে সেই শারীরিক আর মানসিক যন্ত্রনা সামলেছিলাম।

আমি শুধু জানিয়েছিলাম, 

— মোহিনী নয়, আমি দুর্গা  …..

স্টেরয়েডের ধাক্কায় পঁয়তাল্লিশেই দেহ পড়ে গেল। স্তন ঝুলে পেটে আর যৌনাঙ্গে ঘায়ে ভরে গেল। আমি গনোরিয়ায় আক্রান্ত হলাম। মউসি তখন মৃত্যু পথযাত্রী, বিছানায় শয্যাশায়ী। আরো দুবছর দেখে এক রাতে মউসির এক আদমি আমায় প্রায় লাথিয়ে লাথিয়ে স্থানীয় এক রেল স্টেশনে ফেলে দিয়ে গেল। দেখলাম আমি বিহারে আছি।

এখান ওখানে ভিক্ষা করে স্টেশনেই দুবছর কেটে গেল। তারপর পড়ে গেলাম এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার হাতে। হসপিটাল হয়ে এর ওর আস্তানা ঘুরে ওদের সাহায্যেই ফিরে পেলাম মরা বাপ মার এই ভেঙেপড়া কুটির। শেষবেলায় হারিয়ে পাওয়া শেষ সম্বল, মাথা গোঁজার ঠাঁই! 

দেখলাম মা দুর্গার চোখের কোণায় জল চিকিচক করছে। নিজেকে ঠিক রাখতে পারলাম না। যে কথাটি গোপন রাখতে চেয়েছিলাম তা আর পারলাম না,

—  মা,  আমি তোমারই সেই ফেলে দেওয়া সন্তান, একেবারেই নিজের মানে তোমার। তোমার রক্ত মাংসের গড়া। হয়তো অবৈধ, তবুও তুমি যে আমার মা। মা কত বড় হয় জানো? অনেক বড়, ওই আকাশটার মতোই। আমি কোথায় ছিলাম জানি না। জ্ঞান হওয়ার পর থেকেই এক আশ্রম ছিল আমার বাসস্থান। কিছু পড়াশোনার সুযোগ কাজে লাগিয়েছিলাম তাই রক্ষে। কিভাবে কোন ভাগ্যদেবীর অঙ্গুলিসঞ্চালনে আমি তোমারই রক্ষাকারী স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সংস্পর্শে এসে এই সব জেনেছি। যদিও এ রাস্তা অনেক লম্বা। প্রচুর ঘটনা অনেক যোগাযোগ যা আমি নিজেও ভাবিনি জানিও না। তবে সবই ভবিতব্য।  ভাগ্যের পরিহাস। নিষ্ঠুরই বা বলি কি করে? সময় বদলে দিল আমাদের। এই সংস্থার থেকেই আমি এসেছি তোমার কাছে থাকতে আর সাথে তোমাকে আমন্ত্রণ জানাতে তুমি এই বছরের স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার দুর্গাপুজোর দ্বার উদ্ঘাটন করবে। আর তোমায় নিয়ে আমার লেখা এই নিবন্ধ প্রকাশ পাবে তাদের পত্রিকায়। 

হঠাৎই  মা দুর্গার চেয়ার ভেঙে তার কাঠামো পড়ে গেল। 

তার ক্রন্দন রবে চতুর্দিক গুমড়ে উঠলো, 

—  ওরে আমার বাছারে  ….

আমি চেঁচিয়ে উঠলাম,

—  মা, আমার মা, জাগো মা, জাগো মাগো, আজ যে দূর্গা পঞ্চমী, আগামীদিনে তোমার বোধন হবে মা, জাগো এবার তোমারই একান্ত আপন সন্তান ডাক দিচ্ছে জাগো, অকালে বোধন করে আমাদের দূর্গতি দূর করো, মা … 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *