চিরঞ্জয় চক্রবর্তী
সঞ্জু বসু আমাদের গোলকীপার।ও কোনও দিনই অন্য কোন পজিশনে খেলতে চায় নি। ও বলত, তিনকাঠির তলায় দাঁড়ানোর একটা অন্য মজা আছে।খেলাটা দেখা যায়।অনেক বেশি উপভোগ করা যায়।আবার নিজেও খেলছি।এছাড়াও দ্বিতীয় একটা কারণ আছে। ওর প্রিয় খেলোয়াড় চুনী গোস্বামী।চুনী গোস্বামীর আত্মকথা ধারাবাহিক প্রকাশিত হয়েছিল আনন্দমেলা পত্রিকায়। তখন সাইজটা ছোট ছিল, তাই বইয়ের মধ্যে নিয়ে পড়া যেত।স্কুলে আমরা হাতবদল করে পড়তাম।সঞ্জুই নিয়ে আসত।স্কুলে এসে ও আমাদের বলে দিত, কী আছে এ সংখ্যায়।চুনী গোস্বামীকে নিয়ে ও নানারকম স্বপ্ন দেখত।মনে আছে একটা স্বপ্নের কথা বলত, চুণী গোস্বামী বল নিয়ে এগিয়ে আসছে। সারামাঠ চেচাঁচ্ছে। ও দেখছে ,চোখ দুটো ও বলে আটকে দিয়েছে।বক্সের এমাথা থেকে ও মাথা বল নিয়ে ড্রিবিল করছেন, গোলের মুখ পাচ্ছেন না। সঞ্জু ওর ডিফেন্সকে বলছে দেখতে পাচ্ছি না, দেখতে পাচ্ছি না।কেউ পাত্তা দিচ্ছে না।সবাই চেস করতে চাইছে।পারছে না, কে পারবে ঐ দুটো পায়ের কাছে!ও অবাক হয়ে দেখছে কী অসাধারণ পায়ের কাজে প্রতিপক্ষকে বোকা বানাচ্ছেন। এগিয়ে আসছেন, এগিয়ে আসছেন , সঞ্জু পজিশন নিচ্ছে। ইনার বক্সের উপর এসে গেছেন।উনি শট করেছেন।সঞ্জু ঝাঁপিয়ে পড়েছে বলের উপর, তাতেই ঘুম ভেঙ্গে যায়।তারপর কি হল ও জানে না, বলতেও পারে না।
#
সঞ্জু এখন মোহনবাগানের সমর্থক।আগে ও ইস্টবেঙ্গলকেই সমর্থন করত।কারণ ওরা পূর্ববঙ্গের লোক, তার উপর বাড়ির সবাই ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক।বাড়ি থেকেই মানুষ পছন্দ-অপছন্দ শেখে, আমরাও তাই শিখেছি।মনে আছে একবার মোহনবাগানের গোলকীপার প্রদ্যোত গুহের মাথার উপর দিয়ে বলটা তুলে দিয়ে গোল করেছিলেন সুকুমার সমাজপতি।ও স্কুলে এসে বলেছিল, ইস্টবেঙ্গলের লোকদের বুদ্ধি দেখ, তোদের বোকা বানিয়ে গোল দিয়ে দিল।ক্লাশের সব মোহনবাগান সমর্থক চুপসে গেছিল।তারপর একদিন ও ঘুরে গেল। ঘুরে যাওয়ার একটা কারণ আছে।আমাদের ছোটবেলায় বড় খেলা মোহনবাগান মাঠে হোত, জায়গা কম, টিকিটের খুব চাহিদা হোত। তখনও ইডেনে খেলা শুরু হয়নি, যুবভারতী তো স্বপ্নেও নেই।সঞ্জুর ছোটকাকা ছিল ইস্টবেঙ্গলের সদস্য, ও মাঝে মাঝেই ছোটকাকার সাথে খেলা দেখতে যেত।তখন ক্লাশ টু, ইস্টবেঙ্গল-মোহনবাগানের খেলা দেখতে গেছিল।সেই খেলায় ইষ্টবেঙ্গল ২-১ গোলে হেরে গেছিল।দুটো গোলই করেছিলেন চুনী গোস্বামী।
বাড়ি ফেরার পথে ছোটকাকা একটা কথাও বলেনি।কিছু খাওয়ায়নি, প্রচণ্ড খিদে পেয়েছিল, ছোটকাকার মুখের দিকে তাকিয়ে কিছু বলতেও পারে নি, সত্যি কথা বলতে সাহস হয়নি ।সুকুমার সমাজপতিকে প্রায় বার চারেক জার্নাল সিং আটকে দিয়েছেন। রামবাহাদুরও উঠে এসেছিলেন, কিন্তু কিছু করতে পারেন নি।সঞ্জুর মন খারাপ হয়নি।আসার পথে সিদ্ধান্ত নিতে পারে নি,মোহনবাগানে যাবে কিনা বা এরকম ভাবনা আসেও নি।তবে মনের মধ্যে একটা হাল্কা আনন্দ হচ্ছিল, কেন সেটা বুঝতে পারছিলনা বা বোঝার মত ক্ষমতাও তখন ছিল না।
বাড়িতে ফিরে দেখল, সারা বাড়ি শোকে ডুবে গেছে।যেন নিকট আত্মীয় কেউ মারা গেছে।ও নিজেও তখন শোকগ্রস্ত,হেরে যাওয়া মানুষের যেরকম হয়।দেখে মনে হচ্ছিল না বাড়িতে উনোন ধরবে!খিদে পেয়েছে এ কথাটাও কাউকে সাহস করে বলতে পারছেনা।রাত হয়ে গেছিল, নিঝুম বাড়িতে কেউ কোনও কথা বলছিল না। বিছানায় শুতেই ও ঘুমিয়ে পড়েছিল।
#
ঘুমের মধ্যেই চুনী গোস্বামী এলেন। গোলদুটো চোখের সামনে ভেসে উঠল। ইস্টবেঙ্গলের গোলকীপার থঙ্গরাজ প্রথম গোলটা বুঝতেই পারেন নি।দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন বলটা জালের মধ্যে ঢুকে গেল।শান্ত মিত্র কোমড়ে হাত দিয়ে দাঁড়িয়ে দেখলেন।কী বুদ্ধদীপ্ত বল প্লেসিং,কলকাতা মাঠে একজনই পারে, তিনিই শট করেছেন।দ্বিতীয় গোলটা থঙ্গরাজের বাঁহাতের আঙ্গুলে লেগেছিল, কিন্তু শটের তীব্রতায় বলটা তিনি ঠেকাতে পারেন নি, জালে জড়িয়ে গেছিল।জালের ভিতর বলটা স্থির হওয়ার পর দীর্ঘদেহী থঙ্গরাজ অবাকদৃষ্টিতে বলটা দেখছিলেন।
#
ও মোহনবাগানে চলে যেতে ছোটকাকা আর সঞ্জুকে মাঠে নিয়ে যেত না।সঞ্জু শক্তিদার কাছে খেলত।শক্তিদা মোহনবাগানের সমর্থক ছিল। দুজনেই চুনী গোস্বামীর ভক্ত।মঠে গেলে দূর থেকে দেখতে হয়। ও একদিন শক্তিদাকে বলেছিল, দাদা আপনি চুনী গোস্বামীকে দেখেছেন?
তুইওতো দেখেছিস!
দূর থেকে না, কাছ থেকে, যেমন আপনি–আমি কথা বলছি।
না’রে সুযোগ হয়নি।
#
ছোটকাকা মাঠে নিয়ে যায়না সঞ্জু মোহনবাগানী হয়ে গেছে বলে।সঞ্জু মাঠে না যেতে পারার জন্য আক্ষেপ করেনা। কারণ চুনী গোস্বামী আর খেলেন না।মাঠে গিয়ে যাদের খেলা দেখবে, তাঁর ভালো খেলেন , কিন্তু চুনীর মত নয়ন ভোলানো খেলা খেলতে পারে না।চুনী গোস্বামী তখন ক্রিকেট খেলেন।
#
সে বছর দমদমে চার-দশের ফাইনালে সঞ্জু বেস্ট প্লেয়ার হয়েছিল।ও জানত না কে পুরস্কার দেবে।মঞ্চের একপাশে ঘাসের উপর দু-পক্ষের সবাই বসেছিল।শক্তিদা এসে খবরটা দিলেন, সঞ্জু চুনী গোস্বামী এসেছেন। এতক্ষণ মনের মধ্যে জীবনের প্রথম সেরা খেলোয়াড় হওয়ার মিউজিকটা বাজছিল।খবরটা শুনে সেই মিউজিক ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল।ওর হৃদস্পন্দন বেড়ে গেছিল। সাহস নিয়ে উঠে দাঁড়িয়ে দেখতে পারছিল না, উনি এসেছেন কিনা।
#
পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রথমেই সঞ্জু বসুর নাম ঘোষণা হল, সঞ্জু কাঁপতে কাঁপতে মঞ্চ উঠে দেখল ঠিক মাঝখানে তিনি বসে আছেন।তিনি উঠে মেডেলটা ওর গলায় পরিয়ে দিয়ে করমর্দ্দন করলেন।সঞ্জু ওনার
পা-দুটো দেখতে চেয়েছিল, ধরতে চেয়েছিল।কিন্তু প্রণাম করার তো কোনও সুযোগ নেই। কর্মকর্তারা পুরস্কার নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে প্লেয়ারদের ধরে সরিয়ে দিচ্ছেন।ও তিনবার মঞ্চে উঠেছিল, প্রথমবার বেস্ট প্লেয়ার, দ্বিতীয়বার প্রতিযোগীর পুরস্কার আর শেষবার বিজয়ী দলের অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি নিতে।তিনি দুবার করমর্দ্দন করছেন,প্রতিযোগীর পুরস্কার দিয়েছিলেন, ভেঙ্কটেশ আর দীপক দাস।টেবিলগুলো এমণভাবে ঢাকা ছিল সঞ্জু ওনার পা একবারও দেখতে পায়নি।
#
অমলদত্ত বিভিন্ন পাড়ায় ঘুরে ঘুরে বিশ্বকাপের খেলা দেখাতেন।স্কুলমাঠে তাঁবু টানিয়ে দেখানো হয়েছিল।আমরা সবাই দেখতে গিয়েছিলাম। পঁচিশ পয়সা করে টিকিট ছিল।পেলে, রিচি বেনো, লেভ ইয়াসিন এইসব লিজেণ্ডারি খেলোয়াড়দের মুগ্ধ হয়ে দেখেছি।অমল দত্ত অনেক সময়ে ধরতাই বা পরিচিতি দিতেন।মাঠে ময়দানে বিশ্বকাপের খেলা দেখিয়ে তিনি বাংলা থেকে ঐ পর্যায়ের খেলোয়াড় তৈরি করতে চেয়েছিলেন বা বিশ্বপর্যায়ে কিরকম খেলা হয় সেটা দেখাতে চেয়েছিলেন।কলকাতা মাঠ আর বিশ্বকাপ আকাশপাতাল তফাৎ, চোখ জুড়ানো খেলা।সঞ্জু খেলার প্রত্যেকটা শট, ড্রিবিল বা থ্রু দেখলেই বলত, চুনী গোস্বামী হলে এইভাবে খেলতেন।কোনও ফরোয়ার্ড বা খেলোয়াড় গোলে শট নিলেই চুনী গোস্বামীর কথা বলত। খেলা দেখে বাইরে এসে বলত, ‘আমাদের দুর্ভাগ্য, চুনী-পিকে যদি বিশ্বকাপ খেলতে পারত, তাহলে অনেকের আগে ওদের নাম থাকত। পৃথিবীর লোক জানতেই পারল না। আমাদের দেশে কত বড় বড় খেলোয়াড় আছে’।
#
চুনী গোস্বামীর পা দুটো দেখার খুব ইচ্ছা ছিল।ও বলত, ওনার পা দুটো ভগবান অন্য কিছু দিয়ে বানিয়েছেন।সব খেলোয়াড় বল রিসিভ করে পা প্রয়োগ করে। উনি একই সঙ্গে দুটো করতেন। অর্থাৎ ওনার মাথা এবং পা একসঙ্গে কাজ করত। এটা সবার করে না।ঠাকুর রামকৃষ্ণ বলতেন, মন আর মুখ এক করতে, উনি মন আর পা এক করে নিয়েছিলেন।সেই কারণেই উনি চুনী গোস্বামী।
[২]
একবার মোহনবাগান ইস্টবেঙ্গলের কাছে পাঁচ গোলে হেরেছিল।ভাস্কর গাঙ্গুলী তখন মোহন বাগানের গোলকীপার।সঞ্জু বাড়িতে থাকতে পারত না। ছোটকাকার নেতৃত্বে ওকে সবাই ‘পাঁচ’ বলে ডাকা শুরু করল। বাবা-মা ছাড়া কেউ সাপোর্ট করেনি।চুপচাপ নিজের ঘরে বসে থাকত।ঘরে বাইরে এক অকথ্য মানসিক অত্যাচার।যেন ওই অপরাধ করেছে। খেলায় তো হারজিৎ আছে, তা বলে হেরে গেলেই দুয়ো দিতে হবে?
নন্দা বলেছিল, তোমার সঙ্গে মিশতে লজ্জা করে।
কেন? এতদিন তো করেনি!
তোমরা পাঁচ গোলে হেরেছো।
আমিও হারিনি তুমিও হারনি, মোহনবাগান হেরেছে। তাতে আমাদের কি!
বুঝতে পারছনা কেন, তুমি তো মোহনবাগান।
তাতে কি?
তাতেই তো সব।
সঞ্জু আর কথা বাড়ায় না।
দুটো দল ফুটবল খেলবে, একজন হারবে একজন জিতবে, এটাই স্বাভাবিক।অথচ চারদিকে যা ঘটছে!কেমন যেন নিজেকে সমাজ-সংসার ছাড়া মনে হচ্ছে।হারার জন্য তো সঞ্জু দায়ী নয়।নানারকম ভাবতে ভাবতে চুনী গোস্বামীর উপর খুব রাগ হল।চুনী গোস্বামীর ফটোর সামনে দাঁড়িয়ে বলেছিল, ‘আপনি ভালো খেলেছিলেন বলে আপনার ভক্ত হয়েছিলাম। আপনি মোহনবাগানে খেলেন বলে মোহানবাগানের সমর্থক হয়েছিলাম। আপনারা খেলে হেরেছেন – আমি বিধর্মী হয়েছি’।মনে মনে বলেছিল, ‘এ জীবন লইয়া আমি কি করিব’?
[৩]
সঞ্জু বিয়ে থা করেনি।ব্রহ্মচারী মানুষ।ওর ঘরে আয়না নেই। এক সাধু ওকে বলেছিলেন, ব্রহ্মচারীদের আয়নায় মুখ দেখতে নেই।ও দেখে না।সেলুনে গেলে ও চোখ বুঁজেই থাকে। এমনভাবে চুল কাটে ,যা কখনও আঁচড়াতে হয় না।নিরামিষ খায়, ফলে নিমন্ত্রণ পায় না।প্রায়ই মুখ খারাপ করে যাতে লোকে না মেশে।লোকে বিধর্মীর সঙ্গে কেন মিশবে?ও নিজেকে একটা খোলসের মধ্যে ভরে ফেলেছে।অফিস ছাড়া বই নিয়ে থাকে।নিস্তরঙ্গ জীবন ভালোই কাটছিল।বাড়িতে বাবা-কাকারা নেই, মোহনবাগান-ইষ্টবেঙ্গল নিয়ে কথা বা বিতর্কও নেই।পরের প্রজন্ম অনেকেই জানেনা কিছুদিন আগে পর্যন্ত কি হত এ বাড়িতে।এখন ডার্বি হয। ওরা দেখতে চায় না। রাত জেগে ইউরোপিয়ান লীগ দেখে,বিশ্ব কাপ, ইউরোপ- আমেরিকার বিভিন্ন খেলা দেখে।সঞ্জু এখন আর রাত জাগতে পারে না। ফুটবল ঘরে এসে গেছে তবু দেখতে পারে না।
#
এইরকম সময় সঞ্জুদের বাড়ির মেয়ের বিয়ে ঠিক হয়েছে চুনী গোস্বামীর নিকট আত্মীয়ের সঙ্গে।প্রথম প্রস্তাবে সঞ্জু যাবে না বলেছিল।সব শুনে বলেছিল, যেতে পারি একটা শর্তে উনি আসবেন তো!
বেস্ট প্লেয়ারের পদক পাওয়ার পর মুখোমুখি দেখা হয নি।মাঠে দূর থেকে দেখেছে,খবরের কাগজে বা টিভিতে ওনার ছবি দেখেই সন্তুষ্ট থাকতে হযেছে।উনি আসবেন শুনে সঞ্জু পাল্টে গেছে, কারণ ওঁর সঙ্গে দেখা হবে।পা দুটো দেখতে হবে। ওঁনার দুটো পা, লক্ষ্য একটাই জালের মধ্যে বল ফেলা।মোহনবাগান-ইস্টবেঙ্গল দুটো দল উদ্দেশ্য একটাই ভালো ফুটবল খেলা।যে ভালো খেলবে সেই জিতবে।তালতলায় ইস্টবেঙ্গলের সমর্থক দল জিতে কেন মার খাবে?বাড়িতে বা পাড়ায় কেন সে জিতলে বা হেরে গেলে বিধর্মী হবে? সবাই ত্যাগ করবে?সে আলাদা হয়ে যাবে?কারণ একটাই ঐ দুটো পা।
#
বিয়ের দিন সঞ্জু ঠিক করে রেখেছিল চুনী গোস্বামী এলেই পা দুটো হাত দিয়ে দেখবে।সবাই জানত সেকথা। কিন্তু সন্ধেবেলা ম্যারেজ রেজিস্ট্রার একটার পর একটা কাগজ চাইতে শুরু করল। তাই বাড়িতে যেতে হয়েছিল।বিয়ে বাড়ি থেকে বাড়ি মাইল দুয়েক দূরত্ব,বিয়ে বাড়ির জমাট সময়টা এবাড়ি ওবাড়ি করতেই কেটে গেল।নিজেই ভুলে গেছিল চুনীদার পা দেখবে।মনে পড়তেই দৌড়ে গেছিল, একটা ঘরে উনি বসে ছিলেন, যাতে লোকে না বিরক্ত করে।সঞ্জু ঘরে ঢুকেই মাটিতে বসে দুহাতে দুটো পা ধরে বসে ছিল।উনি হেসে ফেলেছিলেন। সঞ্জু ওনার দুটো পায়ে হাত বুলাচ্ছে,ভ্রু কুঁচকে উনি সঞ্জুকে দেখছেন।কী দেখছো?
-আপনার পা কি দিয়ে তৈরি?
-রক্ত–মাংস।
– অন্য সবার সঙ্গে তফাৎ কেন?
দুহাত দিয়ে সঞ্জুকে তুলে পিঠে হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,এটা আমি জানিনা।যিনি জানেন তাঁকে দেখিনি কখনও।
সঞ্জু ওনার কোনও কথা শুনতে পায়নি।ও দেখছিল চুনী গোস্বামী বল নিয়ে ইনার বক্সের মধ্যে ঢুকে পড়েছেন, ও ঝাঁপিয়ে পড়েছে ওনার পায়ের উপর।কানে আসছে একটা শব্দ গো-ও-ও-ও-ও-ল।