অমিতাভ সরকার
বাংলা গানের ‘পাগল হাওয়া’
সুবীর সেন
পাড়ায় দুর্গাপুজোর জলসা। উপস্থিত সবাই একজন স্কুলপড়ুয়া ছেলের গান শুনতে চাইছে। ছেলেটি তো হারমোনিয়াম বাজাতে জানে না, জ্ঞানগম্যিও তত নেই, গানের কথার মানেও ওই বয়সে যা হয়, তেমন কিছু বোঝে না, তবু সবাই চাওয়ায় গাইলো, সলিল চৌধুরীর কথা-সুরে হেমন্তর ’গায়ের বধূ’। তাও অর্ধেকটা। ব্যস, শ্রোতারা তাতেই হাততালিতে ফেটে পড়ল। সবাই ওই ছোটো ছেলেটির গলার প্রশংসায় মশগুল। সেই থেকেই গানের শুরু।
তরুণ বয়সে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান গেয়ে জলসা মাতাতে তাঁর ডাক পড়তো । সুদর্শন, মার্জিত চেহারা দেখে অভিনয় করার প্রস্তাবও পেয়েছিলেন।
যেমন চেহারা, তেমনি কণ্ঠের আবেদন -মেয়েরাও সহজেই প্রেমে পড়ে যেত। বাঙালির প্রেমের গান বলতে ওঁর গাওয়া ‘মোনালিসা’ কিংবা ‘এ যেন সেই চোখ’, কিংবা ‘হয়তো তোমার অনেক ক্ষতি করেছি’ আজও কালজয়ী। এ যুগের প্রেমিক-প্রেমিকাদেরও মনের ঠিকানা – কিছুটা গম্ভীর, মিষ্টি, সহজাত রোমান্স ভরা অথচ কোমল কণ্ঠ- সুরসাগর হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে অনেকটা মিল থাকলেও যথেষ্ট স্বতন্ত্র, সুধা ঢালা আবেগ মেশানো ঘরোয়া আমেজে ভরপুর। যার কথা বলছি, সেই গায়কের নাম সুবীর সেন। ’ওই উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্ন রঙিন’,’স্বর্ণ ঝরা সূর্য রঙে’- গানগুলো শোনেননি এমন কেউ নেই। সুবীর সেন নামটা বললেই এই দুটো গানই যেন বিশেষ করে কানের সামনে বাজতে থাকে। দীর্ঘ ষাট বছরের সঙ্গীত জীবনে গানের সংখ্যা দেড়শো মতো হবে। কিন্তু সংখ্যা দিয়ে মনে হয়, সব কিছু বিচার হয় না, অনেক কিছু মনের ভিতর থেকে অনুভব করবার থাকে। সুবীর সেনের গানও তাই।
![](https://prativasmagazine.com/wp-content/uploads/2025/01/IMG-20250119-WA0004-1.jpg)
বোহেমিয়ান মনটা গানের হিসাব করেনি কোনোদিন, ভালোবেসে গান শুনিয়ে গেছে-আর সবাইকে আপন করেছে। ব্যস, এতেই স্বার্থকতা। আর কিছুর দরকার পড়ে না।
জন্ম ১৯৩৪ সালের ২৪শে জুলাই, অসমের ডিব্রুগড়। বাবা ডাঃ শৈলেশ চন্দ্র সেন, মা লিলি সেন। গুয়াহাটিতে ওদের পারিবারিক একটা ফার্মেসিও ছিল। পৃথ্বীশ সেন, গৌরী সেন, সুনীল সেন, অরুণ সেন- ওঁর ভাই বোনের নাম (সুবীর সেন গায়িকা রুণা লায়লার সম্পর্কে মামা হন, রুণা লায়লার মা অনিতা সেনও সুবীর সেনের বোন ছিলেন)।
ছোটবেলা থেকেই সঙ্গীতের প্রতি অনুরক্ত ছিলেন। কিশোর বয়সেই হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান গেয়ে শ্রোতাদের মাত করে দিতে পারতেন। ছাত্র অবস্থায় ১৯৫১ সালে লখনৌয়ের মরিস কলেজে শাস্ত্রীয় সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে পণ্ডিত শ্রীকৃষ্ণ রতন ঝংকারের কাছ থেকে পুরস্কৃত হন। ম্যাট্রিক পাশ করার পর কলকাতায় গান শিখতে চলে আসেন। কলকাতায় প্রথমে মামার বাড়িতে ওঠেন। সেখানে সবাই
রবীন্দ্রসঙ্গীত খুব ভালোবাসতো। বাবার খুড়তুতো ভাই রবীন্দ্রসঙ্গীত গবেষক নীহারবিন্দু সেন। মামারবাড়িতে থাকতেই সুবীর সেনের রবীন্দ্রসঙ্গীত গাওয়া শুরু। আর পাবলিক ফাংশনে হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গান গাইতে হতো। হেমন্ত মুখোপাধ্যায় তো বটেই, তাছাড়া তালাত মাহমুদ, ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য ছিল সুবীর সেনের আইডল। গীতা দত্ত ছিলেন প্রিয় গায়িকা এবং প্রিয় মানুষ।
কলকাতার আশুতোষ কলেজে পড়বার সময় এইচএমভি আয়োজিত কেরেজু সঙ্গীত প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে ১৪০০ প্রতিযোগীর মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেন। কলকাতায় থাকাকালীন সুবীর সেনের সঙ্গীতগুরু ছিলেন পণ্ডিত চিন্ময় লাহিড়ী; ইনিই পরে পণ্ডিত উষারঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়ের(১৯২০-১৯৯২) কাছে সুবীর সেনকে ঠুংরি শিখতে পাঠিয়েছিলেন। সুরকার অনুপম ঘটকের কাছেও গানের প্রশিক্ষণ নিয়েছেন।
প্রথম রেকর্ড ১৯৫৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে। কলম্বিয়া লেবেলে বেরোনো রেকর্ডের(GE24715) এক পিঠে ছিল- ‘জীবন বাতি নিভিয়ে যেদিন’, আরেক পিঠে ‘আর কত জানাবো তোমায়।’ কথা শ্যামল গুপ্ত, সুর চিত্ত রায়। গানদুটো শ্রোতাদের সে ভাবে আকৃষ্ট করতে পারেনি। ১৯৫৬ সালে সুধীন দাশগুপ্তের কথায় ও সুরে ’ওই উজ্জ্বল দিন ডাকে স্বপ্ন রঙিন’,’স্বর্ণ ঝরা সূর্য রঙে’- রেকর্ড দুটো বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গেই সুবীর সেন অচিরেই জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন।
তৃতীয় রেকর্ড সুধীন দাশগুপ্তের সুরেই -’এত সুর আর এত গান যদি কোনোদিন থেমে যায়’। এ গান যেন সুবীর সেনের নিজের জীবনেরই আখ্যান। শেষ জীবনে হয়েও ছিল তাই। সে সব কথায় পরে আসছি।
তেইশ বছর বয়সে চিত্র পরিচালক গুরু দত্তের আহ্বানে সুবীর সেন বোম্বে চলে আসেন। সুধীন দাশগুপ্তও গুরু দত্তের প্রযোজনা সংস্থায় কাজ করার জন্য বোম্বে গিয়েছেন। সুবীর সেন, সুধীন দাশগুপ্ত দুজনে ‘তারাদেও সোনাওয়ালা’ নামক বাড়িতে কিছুকাল ছিলেন। বোম্বে অবস্থান কালে সেই সময়ের এক নম্বর সুরকার জুটি শংকর-জয়কিষানের নজরে পড়ে যান, এই জুটির হাত ধরেই ‘কাঠপুতলি’(১৯৫৭) সিনেমায় কিংবদন্তী অভিনেতা বলরাজ সাহানির লিপে গাইলেন ‘মঞ্জিল ওহি হ্যায় প্যার কি, রাহি বদল গয়ে’। জীবনের প্রথম ছবিতেই গান গেয়ে সুপারহিট। এ একটা রেকর্ড। এ ব্যাপারে পিছনে ফেলে দেন তালাত মাহমুদকে। তালাত মাহমুদের দ্বিতীয়, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের তৃতীয় ছবিতে গাওয়া গান সুপারহিট হয়েছিল।
শংকর- জয়কিশান তাঁদের সুরারোপিত পর পর আরো তিনটে ছবিতে সুবীর সেনকে দিয়ে গান গাইয়েছিলেন। লতা মঙ্গেশকরের সঙ্গে দ্বৈতকণ্ঠে ‘ম্যায় রঙ্গিলা পেয়ার কা রহি’, ‘আশ কি পনছী’(১৯৫৬) সিনেমায় জুবিলি স্টার রাজেন্দ্রকুমারের লিপে ছবি সেন কণ্ঠ দিয়েছিলেন ‘দিল মেরা এক আশ কা পনছী, উড়তা হ্যায় উঁচি গগন পর’। বোম্বে থাকাকালীন ‘ছোটি বহেন’(১৯৫৯), ‘বয়ফ্রেন্ড’(১৯৬১), ‘পাসপোর্ট’(১৯৬১) ইত্যাদি বেশ কিছু ছবিতে গান গেয়েছিলেন।
‘হামে উন রাহো পে চলনা’ হ্যায়(মাসুম), ‘প্যার মে মিলনা সনম’(অর্ধাঙ্গিনী),’ইয়েহ পুকার কিসকে লিয়ে’(রানী চন্দ্রাবতী), ‘বুঝ গ্যায়া দিল কা দিয়া’(জাদু আঙ্গুঠী),‘কোই মেরা হো গ্যায়া’(মিডনাইট), ‘জাগো আনজানি রাজদুলারী’(এক সুরাত দো দিল)- প্রভৃতি সুবীর সেনের বলিউডে প্লে-ব্যাক করা কয়েকটি সুপারহিট গানের উদাহরণ।
বোম্বেতে ন’ বছর থাকার পর কলকাতায় চলে আসেন। ১৯৬৬ সালে গৌরীপ্রসন্ন মজুমদারের কথা, অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় সুরে সুবীর সেনের আরেক বিখ্যাত রেকর্ড বেরোলো-’নয় থাকলে আরো কিছুক্ষণ’। তাছাড়া, সুধীন দাশগুপ্তের সুরে ১৯৫৬ সালে পুজোর গান হিসেবে রেকর্ড করা ‘এত সুর আর এতো গান’, ১৯৬৭ সালে অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা ও সুরে ‘সারাদিন তোমায় ভেবে’ কিংবা সলিল চৌধুরীর সুরে ১৯৮০ সালে ‘ধরণীর পথে পথে ধূলি হয়ে, কিংবা সলিলেরই সেই বিখ্যাত সৃষ্টি ‘পাগল হাওয়া’-
আজও সবার মুখে মুখে ফেরে। বাংলা, হিন্দি ছাড়াও ওড়িয়া, অসমীয়া প্রভৃতি প্রাদেশিক ভাষাতেও গান গেয়েছেন এবং অগণিত গুণমুগ্ধ শ্রোতাদের মন জয় করেছেন। অবশ্য কলকাতা চলে আসার পরেও বোম্বেতে গান গাইতে গিয়েছেন। বলিউডে শংকর-জয়কিশান তো বটেই, এছাড়াও কল্যাণজি- আনন্দজি, লক্ষ্মীকান্ত-প্যারেলাল- এঁদের সবার সুরেই গান গেয়েছেন। আধুনিক বেসিক গানের থেকেও বেশি রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছেন এবং শ্রোতাদের হৃদয়ে চিরস্থায়ী আসন লাভ করেছেন। কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় একবার বলেছিলেন, সুবীর সেনের আরো বেশি করে রবীন্দ্রসঙ্গীতে মনোনিবেশ করা উচিৎ। রবীন্দ্রসঙ্গীতকে ঘিরেই হয়তো দেবব্রত বিশ্বাসের সঙ্গে সুবীর সেনের গভীর সখ্য তৈরি হয়েছিল। পরবর্তী জীবনে সুবীর সেন বোম্বের ফ্ল্যাট জলের দরে বিক্রি করে কলকাতায় নানা জায়গায় থাকতে থাকতে শেষমেশ পণ্ডিতিয়া প্লেসের নিবাসে থিতু হন।
তা বলে বোম্বের গানের টান কিন্তু পুরোপুরি উপেক্ষা করতে পারেননি। যখনই অন্তর থেকে ডাক পেয়েছেন, চলে গিয়েছেন।
এমনকি বোম্বে এবং কলকাতায় কিছু ছবিতে সুরস্রষ্টা হিসেবে কাজ করেছেন।
কলকাতায় ১৯৬৭ সালে ‘মিস প্রিয়ংবদা’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক ছিলেন। ‘মিডনাইট’ সিনেমার সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে মহম্মদ রফি, তালাত মাহমুদ, গীতা দত্তকেও গান গাইয়েছেন। ১৯৭২ সালে চলচ্চিত্রটি বোম্বে এবং লন্ডনে মুক্তি পায়।
সুদর্শন, বুদ্ধিদীপ্ত চেহারা, সাবলীল বাচনভঙ্গি, সহজাত ব্যক্তিত্বসম্পন্ন- সুবীর সেনকে চিত্রপরিচালকরা অভিনেতা হিসেবেও দেখতে চাইতেন। একাধিক প্রস্তাবও পেয়েছিলেন। প্রথম দিকে বেশ কয়েক বার অভিনয়কে এড়িয়ে গেলেও ‘মোমের আলো’(১৯৬৪) সিনেমায় উত্তমকুমারের বিপরীতে দ্বিতীয় নায়ক হিসাবে, আবার বোম্বেতে বাসু ভট্টাচার্যের ‘অনুভব’(১৯৭১) সিনেমায় নায়ক সঞ্জীবকুমারের বাঙালি বন্ধু হিসেবে সুবীর সেন স্বনামেই অভিনয় করেছেন(এই সিনেমায় কানু রায়ের সঙ্গীত পরিচালনায় প্রথম কোনো হিন্দি ছবিতে রবীন্দ্রসঙ্গীত ব্যবহার করা হয়- সুবীর সেন এই সিনেমায় স্বকণ্ঠে গেয়েছিলেন, ‘সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে’, পুরোটা অবশ্য সিনেমায় ব্যবহৃত হয়নি।)
এরকমও শোনা যায়, হৃষিকেশ মুখোপাধ্যায়ের ‘অভিমান’(১৯৭৩) সিনেমায় নায়ক সুবীর কুমারের ভূমিকায় প্রথমে সুবীর সেনকে ভাবা হয়েছিল, সুবীর সেন অভিনয় করতে অসম্মতি জানালে অমিতাভ বচ্চন এই ভূমিকায় অভিনয় করে বিখ্যাত হন।
লেখক হিসেবে সুবীর সেন আরেক বিখ্যাত শিল্পী শ্যামল মিত্রের স্মরণে শ্যামল মিত্রের স্মৃতিকথা লিখেছিলেন, ‘শ্যামল মিত্র- এ কম্পাইলেশন অফ এসেসেস’-গ্রন্থের একটি অধ্যায়ে।
সুবীর সেন বাংলা আধুনিক গানে এক নিজস্ব আধুনিক ধারার প্রবর্তক। পশ্চিমী সঙ্গীতের জিম রিভস, ন্যাট কিং কোলের বিশেষ অনুরাগী ছিলেন। বিদেশী ভাষার গানেও সুবীর সেনের কণ্ঠ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে পাশ্চাত্যের সঙ্গীতপ্রেমিদের অপূর্ব লেগেছিল।
আসলে ওঁর কণ্ঠের অদ্ভুত সহজ সরল অথচ গভীর একটা আবেদন ছিল, যে জাদুতে রবীন্দ্রসঙ্গীত, আধুনিক, হিন্দি ফিল্মের যে গানই হোক না কেন, শ্রোতারা তা সানন্দে গ্রহণ করতো।
দীর্ঘ সঙ্গীত জীবনের সঙ্গীত সাধনার স্বীকৃতিস্বরূপ ২০০৭ সালে হারমোনিকা সঙ্গীত সম্মান, ২০১২ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকার কর্তৃক সঙ্গীত মহা সম্মান, ২০১৩ সালে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তরফ থেকে বঙ্গবিভূষণ সম্মান লাভ করেন।
জীবনের শেষ বছরগুলোতে সুবীর সেন খুব অসুস্থ হয়ে পড়েন। শরীরে নানা অসুখ বাসা বাঁধে, এমনকি গান গাওয়ার ক্ষমতাটুকুও চলে যায়। দিনগুলোও তখন বেশ কষ্টে কেটেছে।
শেষমেশ ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ২০১৫ সালের ২৯ শে ডিসেম্বর দক্ষিণ কলকাতার বেসরকারি হাসপাতালে মারা যান।
বিরাশি বছরের আয়ুষ্কালে রেখে গেছেন অগণিত শ্রোতা, বন্ধু -দেশবিদেশের অগণিত প্রিয়জনকে।
ওঁর কন্যা সুপ্রিয়া সেন ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটিতে পেশাগত থেরাপির অধ্যাপনা করেন।
সুবীর সেনকে বাঙালি ভোলে নি। যতদিন প্রেম থাকবে, ততদিন ভালোবাসার আবেদনে সুবীর সেন
বেঁচে থাকবেন,- ‘আকাশ যেখানে গল্প বলে’,’যখন হাত বাড়ালেই আকাশ’, ‘চন্দন আঁকা ছোট্ট কপাল’, কিংবা ‘তোমার হাসি লুকিয়ে’,’তোমরা আমার গান শুনে’,’তোমারে পেয়েছি বলে’,’কি ভালো লাগলো চোখে’
-এই ব্যস্ত ’নগর জীবনে’ ‘ছবির মতো, হয়তো…’