কৌশিকরঞ্জন খাঁ
তথাগত কাউন্টারে বলেই ফেলল – সবাই পুরুষ ভোটকর্মী, সেখানে একজন মহিলা পুলিশ দিচ্ছেন? কাউন্টারে মাইক্রোফোনের সামনে বসে থাকা সরকারি কর্মচারীটি বললো — এবার পুলিশ শর্ট আছে। মহিলাদেরও যেতে হচ্ছে। কিচ্ছু করার নেই স্যার।
পোলিং পার্টি নম্বর আটত্রিশের জন্য একটা টাটা ম্যাজিক ভ্যান অ্যালোট হয়েছে। একে একে ভোটের জিনিসপত্র নিয়ে সবাই তথাগতর পেছন পেছন আসছে। স্বপ্না দেবনাথ মাত্র বাইশ তেইশ বছরের এক মেয়ে! তাকে মাত্র একটা লাঠি হাতে দিয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। তথাগত আর কি করবে! একে একে যে যার মতো বসে পড়েছে গাড়িতে। পেছনের মুখোমুখি সিটে সে স্বপ্নাকে নিয়ে বসলো।
তথাগতকেই প্রথম কথা বলতে হয় — বুঝতেই পারছি আপনার খুব অসুবিধে হবে। একটু মানিয়ে গুছিয়ে নিতে হবে।
সমস্ত ভোটকর্মীদের মধ্যে সে–ই কাছাকাছি বয়সী হওয়ায় স্বপ্নার অসহায় অবস্থায় অনুভব করতে পারছে। সমস্ত পুরুষ ভোট কর্মীদের সাথে একা একটি অল্পবয়সী মেয়ের দুটো দিন কাটানো খুব সহজ কাজ নয়। চাকরির বাধ্যবাধকতা থাকলে কিছু করার নেই।
এতক্ষণে স্বপ্না মুখ খুললো। আমার তো সবে দুইমাস হলো চাকরি। থানা পোস্টিং হয়নি। এখনো পুলিশ লাইনে ট্রেনিং এ আছি। আমি…
তথাগতর খুব মায়া হলো। একেবারেই ঘরোয়া মেয়ে। নম্র কথাবার্তা। তাকে আস্বস্ত করতে বলে – অত চিন্তা করবেন না, চাকরি জীবনের প্রথম ভোটের ডিউটি প্রিসাইডিং অফিসারের চলে এসেছে। যা হোক একটা হবে।
তারপর একটু ভড়কে দিতে বলে — কেউ মারতে এলে আপনি এই লাঠিটা দিয়ে আমাদের বাঁচাতে পারবেন তো!
বয়স অল্প হলেও স্বপ্না যে বেশ স্মার্ট তা বোঝাই গেল। এটা যে ইয়ার্কি তা বুঝে নিয়ে বলে — হোক না লাঠি, পুলিশ ধরলে গুলিও বেরোয়।
— বাঃ! আপনার কনফিডেন্সে লেভেল তো বেশ হাই!
— হ্যা,আপনাকে দেখেই তো! প্রথমবারের প্রিসাইডিং এর সাথে ডিউটি করতে যাচ্ছি না! আপনি প্রথমবার, আমি প্রথমবার, সব ল্যাজেগোবরে না হয়ে যায়!
গাড়ি পাকা রাস্তা ধরেই যাচ্ছে। অন্যান্য পোলিং অফিসাররা চুপচাপ ঘাপটি মেরে তাদের কথাবার্তা শুনছে আর উইন্ড স্ক্রিনে চোখ রেখে রাস্তা দেখছে। শুধু ড্রাইভার ছেলেটি বলল — আপনাদের বুথটা খুব একটা ভালো না। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভোট শেষ করেই আর. সি. তে চলে যাবেন। লেখালেখির কাজকর্ম সব আর. সি. তে বসেই করবেন।
তথাগতর মনে হলো ছেলেটি ঘোড়েল মাল। তাড়াতাড়ি রিলিজ পাওয়ার জন্য আগে থেকেই ছক কষছে। ড্রাইভারের কথায় ফার্স্ট পোলিং বলে — তেরো’শর উপরে ভোটারের তিনটে ব্যালটের ভোট শেষ হতে তো রাত বারোটা হয়ে যাবে মনে হচ্ছে!
একটা সরু রাস্তায় টার্ন নিতে নিতে ড্রাইভার বলে — আগের বার পঞ্চায়েত ইলেকশনে বোমাবাজি হয়েছিল। তার আগেরকার ব্যালট বক্স পুকুরে পাওয়া গেছিল।
তথাগত একবার আড়চোখে স্বপ্নার দিকে তাকায়। মাথা নিচু করে মোবাইল ঘাঁটছে। একটা এবড়োখেবড়ো জায়গায় হঠাৎ ঝাঁকুনি খেয়ে মোবাইলটা সামলে নিয়ে স্বপ্নাও তথাগতর দিকে তাকায়। তথাগত তখন তাকিয়েই ছিল স্বপ্নার নাকে জমে ওঠা বিন্দু বিন্দু ঘামের দিকে। বুঝতে পারেনি স্বপ্না এই সময়েই তাকাবে। তথাগতর বেসামাল অবস্থা দেখে স্বপ্না যেন চোখের কোনে হাসে। তার হাসি সংক্রামিত হয় তথাগতর মধ্যেও।
সমস্ত বোরিং বোরিং ব্যাপারের মধ্যে স্বপ্না দেবনাথে উপস্থিতি তথাগতকে ভোটের ডিউটিটা করতে বাড়তি ইন্সপিরেশন দিচ্ছে। ভোটটা লক্ষ্য নয়, স্বপ্নার সাথে দুটো দিন কাটানোর সুযোগ সমস্ত টেনশন উধাও করে দিয়েছে।
বুথটা দেখে ভীষণ ভালো লেগে গেল তথাগতর। রাস্তার ধারে স্কুল। নামটা আলোহাওয়ায় অনেকটা ফ্যাকাশে হয়ে এলেও বোঝা যাচ্ছে। পেছনে ধানী জমি। প্রাচীরের ধার দিয়ে একসারি আকাশমণি গাছ। গুড়ো গুড়ো হলুদ ফুল ঝরে আছে ইট বাঁধানো রাস্তায়। তার উপর দিয়ে আগে আগে হেঁটে যাচ্ছে স্বপ্না। তথাগত স্বপ্নার সংলগ্ন হয়ে পেছনে পেছনে। তার নিঃশ্বাস পড়ার শব্দ তথাগত টের পাচ্ছে। এমনকি একটা নরম গন্ধ সে পাচ্ছে। এই নিঃশ্বাসের সাহচর্য সে দুটো দিন পাবে। প্রথম ভোট করতে আসার টেনশন হেরে যাচ্ছে ঐ মিষ্টি নিঃশ্বাসের কাছে। পেছনে লটবহর নিয়ে অন্যান্য পোলিং অফিসাররা। সে সব মনে থাকছে না তথাগতর।
বুথটা ঠিকই আছে। জানালা খুলে দিলে ফ্যান চালানোর প্রয়োজন নেই। মেঝেটাও দিব্বি আছে। ঘুমোতে অসুবিধে হবে না। স্বপ্না পাশের ঘরটায় নিজের বেডিং সাজিয়ে নিয়েছে তিনটে বেঞ্চ জোড়া দিয়ে। তথাতগ ‘পি মাইনাস ওয়ান ডে’র কাজগুলো সেরে রাখতে তৎপর। এইসময় স্বপ্না বাইরে থেকে ডাকে — একটু শুনুন না!
তথাগত ট্র্যাকসুট টিশার্ট পরে হাতে জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে বাইরে আসে।
—বলছিলাম যে টয়লেটের অবস্থা তো খুবই খারাপ!
—হুম! বুঝতে পারছি আপনার ভীষণ অসুবিধে হবে। তবুও তো মানিয়ে নিতেই হবে।
সংকোচকে দূরে সরিয়ে স্বপ্না মরিয়া হয়ে বলে, টয়লেটের দরজা নেই।
সেক্টর অফিসারের ফোন লাগছে না। গ্রামগঞ্জের টাওয়ারের অবস্থা খারাপ থাকেই। পি মাইনাস ওয়ান ডের কাজকর্ম শিকেয় তুলে তথাগতকে মাঠে নামতে হয়। ‘কি–হোল্ডার’এর বাড়ি সামনের রাস্তা পেরিয়ে একটু দুরে। তথাগতর তৎপরতায় সেখানেই স্বপ্নার ব্যবস্থা করা হয়। এমনকি কি–হোল্ডারের মেয়েকেও রাতে স্বপ্নার সাথে থাকার ব্যবস্থা করে।
নিশ্চিন্ত মনে কাজ শুরু করলে স্বপ্নাকে দেখা যায় বারান্দার ওপাশে আকাশমনি গাছের নিচে ইউনিফর্ম পরে দাঁড়িয়ে পায়চারি করছে। মাঝে মাঝেই ঘরের ভেতর কাজে মগ্ন তঘাগতর দিকে তাকাচ্ছে। দায়িত্ববান আন্তরিক সুপুরুষ যুবা তথাগত মুগ্ধ করেছে তাকে। তথাগতর সাথে চোখাচোখি হতেই মাথাটা নত করে কৃতজ্ঞতার হাসি দেয়।
রাত নামতে নামতে অন্ধকারপুরীর মধ্যে আলোর ঠিকানা হয়ে জেগে রয়েছে দ্বিনগর প্রাথমিক বিদ্যালয়। ঘরে তখনো কাজ চলছে। কয়েকজনকে দেখা গেল হেঁটে আসতে। দরজার বাইরে থেকে বলতে শোনা গেল – তিন-চার’শ ব্যালট দিতে হবে। তথাগতর ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সজাগ হয়ে উঠলো। এখন মাথা ঠান্ডা রাখার সময়। সে বলল – সই হয়নি। বিনা সইয়ের ব্যালট নিয়ে কি হবে? তারা ঘন্টা খানেক বাদে আসবে বলে চলে গেল।
স্বপ্না টের পেয়েছিল। সামনে এসে দাঁড়িয়েছিল। ওরা চলে যেতেই তথাগতর কাছে এসে বলল – ঘন্টাখানেক বাদে এলে কি করবেন?
—ভাবিনি। আসুক তো আগে।
—আমি আমাদের সেল এ ইনফরমেশন দিয়ে রাখছি।
একটা থমথমে আতঙ্কের পরিবেশ। দিনের বেলার এসে যে ভালোলাগা ছিল বুথ ঘিরে এখন সেখানে জোরে শ্বাস ফেলতেও ভয় হয়। সব পোলিং অফিসাররা কাজ গুটিয়ে এনেছে। এমন সময় আবার এলো কয়েকজন। তথাগতকে কে হুমকির সুরে বলে, আপনি প্রিজাইডিং! ব্যালট যেন একটাও বাইরে না যায়। শুনতে পেলাম এক ঘন্টা পরে ওদের ব্যালট দেবেন বলেছেন!
তথাগত বুদ্ধি করে বলে – দেব না জন্যই তো বলেছি। আমরা খেয়ে দেয়ে এখনই দরজা দেব।
সামনে এসে দাঁড়িয়েছে স্বপ্না। অত জন মানুষের সামনে অস্ত্রহীন একা একজন মহিলা কিই বা করবে! তারা চলে গেলে তথাগতর কাছে এসে বলে – নিজেকে ঠুঁটো জগন্নাথ মনে হচ্ছে, জানেন।
তথাগত তাকে সাবধান করে বলে – দেখবেন বীরত্ব দেখিয়ে আবার ঝাঁসির রানি হয়ে উঠবেন না! এই জায়গায় কোনও জনপ্রাণীর চিহ্ন নেই মেরে গুম করে দিলেও কিছু করার থাকবে না।
অন্ধকারের চাদর ভেদ করে বারান্দায় এসে দাঁড়ালো কি হোল্ডার ও তার মেয়ে। ফিসফিস করে বলে – খাওয়া দাওয়া সেরে নিজেদের ঘরে ঢুকে যান। দরজা খুলবেন না। স্বপ্নার উদ্দেশ্যে বলে – মা তুমি কোনও ঝামেলায় জড়িও না। যা হয় হবে। নিজের প্রাণ আগে।
খাওয়া সেরে একটা সিগারেট ধরিয়ে তথাগত স্বপ্নার দরজার সামনে এসে বলে, আপনাদের জন্য দুশ্চিন্তা থাকবে। রাতে দু’জনের কেউই একদম ঘরের বাইরে বেরোবেন না।
স্বপ্না গোল গোল চোখ করে হেসে বলে – কে যে পুলিশ সেটাই তো বুঝতে পারছি না।
—থাক। কাল দিনের আলোয় পুলিশ হবেন। এখন দরজা আটকে দিন।
মাঝরাতে দরজা ধাক্কাধাক্কিতে ঘুম ভেঙে যায় তথাগতর। মোবাইলটা অন করে দেখে রাত মাত্র বারোটা। অন্যান্য পোলিং অফিসাররা কাছে এসে ফিসফিস করে বলে – দরজা খুলবেন না স্যার। ছিনতাই বাজরা এসেছে মনে হচ্ছে। চুপচাপ থাকুন। ঘরের আলোও জ্বালিয়েন না। সিসিটিভির আলো জ্বলছে। অন আছে।
তথাগত চুপ করে থাকলেও পাশের ঘরের মেয়ে দুটোর জন্য দুশ্চিন্তায় পড়লো। বাইরে স্বপ্নার গলা পাচ্ছে বলে মনে হলো। অন্যান্য পোলিং অফিসারদের দিকে তাকিয়ে বলে – পুলিশ মেয়েটা বোধ হয় বেরিয়েছে। একা একটা মেয়ে! আর ঘর আটকে বসে থাকা ঠিক নয়।
কারো কথা না শুনেই দরজা খুলে দেয় তথাগত। সামনে তিনজন কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান। মাঝরাতে পোস্টিং দিয়েছে তথাগতর বুথে। তারা হিন্দিতে স্বপ্নাকে বলছে – না ম্যাম আপনি ঘরেই থাকুন। আমরা আজ রাতে তিনজনই ফুল ডিউটি করবো।
ব্যাগগুলো তথাগতদের ঘরে রেখে তারা এ কে ফরটি সেভেন কাঁধে নিয়ে অন্ধকার মাঠে ঘুরে বেড়াতে লাগলো। বারান্দার আলো নিভিয়ে পাশাপাশি বসে তথাগত ও স্বপ্না। কারিমা ওঘরে বেঘোরে ঘুমোচ্ছে। আজ তাদের ঘুম আসবে না।
আমরা দুজন দুজনকে নিয়ে একটু বেশি ভেবেছি খেয়াল করেছেন – রাতের ঝিঝি পোকার শব্দে মিশে গিয়ে তথাগত ফিসফিস করে বলে।
—হ্যা। এটা ঠিকই বললেন। প্রথম ডিউটিতে একজন ভালো প্রিসাইডিং অফিসারের সাথে সাক্ষাৎ হলো তো।
— গান শুনবেন?
স্বপ্না বিস্মিত হয়ে বলে, আপনি গান জানেন?
— আরে না না! আমি মোবাইলে গান শোনার কথা বলছি।
— না থাক। চার্জ শেষ হয়ে যাবে। কাল ঝামেলায় পড়বেন। তার চেয়ে কথা বলি। সময় কেটে যাবে।
না ঘুমিয়েও কেন্দ্রীয় বাহিনীর রাত পাহারায় কিভাবে যেন রাতটা কেটে গেল। নিঃস্তব্ধ রাতে নিশাচর পাখির ডাককেও আপন মনে হয়। স্বপ্নার সাথে কত জন্মের জমে থাকা কথা বলে সে। স্বপ্নার কথা শুনতে শুনতে এক অজানা ভালোলাগার মূহুর্ত গুলি পার হয়ে যায়। তথাগতর মনে হয় রাতটা একটু দীর্ঘ হলে ক্ষতি কি হত! ভোটের চিঠি পেয়ে কখনো ভাবতেও পারেনি – এভাবে অপরিচিত একটা মিষ্টি মেয়ের সাথে গল্প করে একটা রাত কাটবে।
সকাল ছটায় ভোট শুরু হয়ে গেছে। তিনটি ব্যালটে ভোট অপূর্ব দক্ষতায় সামলে চলছে ফার্স্ট, সেকেন্ড, থার্ড, পোলিং অফিসাররা। এক মূহুর্ত সময় নষ্ট না করে ঝড়ের বেগে ভোট চলছে। কেন্দ্রীয় বাহিনীর জওয়ান ভোটার ছাড়তে ছাড়তে হাফিয়ে উঠছে। স্বপ্না অবাক হয়ে দেখছে কাতারে কাতারে ভোটার মূহুর্তের মধ্যে ভোট দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। বিভিন্ন দলের পোলিং এজেন্ট সন্তুষ্ট। এই বুথে এমন ভোট আগে হয়নি। সবকিছু সুষ্ঠু অথচ দ্রুত হচ্ছে।
কাটায় কাটায় ছটায় ভোট শেষ। তেরো’শ ভোটারের মধ্যে হাজার চুয়ান্ন ভোট পড়েছে। পরিযায়ী শ্রমিকরা এবার বাইরে, ভোট দিতে আসেনি।
আবার একই সিট অ্যারেঞ্জমেন্টে ওরা গাড়িতে উঠে বসলো। স্বপ্না চলন্ত গাড়িতে ফিসফিস করে বলে – আপনার বড্ড তাড়াহুড়ো! কি হতো যদি ভোটটা একটু রাত গড়িয়ে শেষ হতো!
— আপনি বাড়ি ফিরবেন না! কত কষ্ট করতে হলো আপনাকে!
— না। আমার ভালো লেগেছে। আর কি পাবো এমন প্রিসাইডিং অফিসার! গাড়ির ভেতরে অন্য সবার দিকে তাকিয়ে স্বপ্না তথাগতর হাতে হাত দেয়।
হাতটা মুঠোতে ধরে তথাগত বলে, সত্যি না! আর দেখা হবে না। পরের ভোটেও আপনাকে খুঁজে বেরাবো খাকি ইউনিফর্মের ভিড়ে।
— খুঁজে পাবেন না।
— পাবোই।
লাল রঙের ম্যাজিক ভ্যানটা চলছে তো চলছেই। তথাগত স্বপ্নার কথোপকথনের মতো লম্বা একটা পথ পেরিয়ে যাচ্ছে। কালো রাস্তার থেকে হেড লাইটের আলো পাশের সবুজ ধানক্ষেতে ছড়িয়ে পড়ছে। তার পরেই রাতের আকাশ মিশে যাচ্ছে মাঠে। সেখানে কেউ কোথাও নেই। গাড়ির ভিতরের নিস্তব্ধতায় মনে হচ্ছে সওয়ারি শূন্য একটা গাড়ি রাত চিরে এগিয়ে যাচ্ছে ধীর মন্থর গতিতে। কেবল ফিসফিস করে কথা বলছে দুজন। রিসিভিং সেন্টার আর কিছুতেই আসছে না। অনন্ত পথের অন্তহীন কথোপকথনের মতো চলছে লাল রঙের ম্যাজিক ভ্যান। প্রতিভাস ম্যাগাজিন