মির্জা গালিবের বাংলা ভাবানুবাদ

আশিস ভৌমিক

লেখক পরিচিতি

 (জন্ম 5 ই এপ্রিল 1974, গ্রাম -বৃন্দাবনচক , পাঁশকুড়া , পূর্ব মেদিনীপুর ।প্রাথমিক পড়াশোনা গ্রামে ।উচ্চ শিক্ষার জন্য কলকাতায় ।সুরেন্দ্রনাথ কলেজ থেকে রসায়ন শাস্ত্রে স্নাতক ।গৃহ শিক্ষকতার ফাঁকে ফাঁকে সাহিত্য চর্চা । বিভিন্ন লিট্ল ম্যাগাজিনে লিখে চলেছেন ।  প্রথম কাব্যগ্রন্থ “”হিরণ্ময়ী ” । দ্বিতীয় কাব্যগ্রন্থ ” কালবেলা “।

– বুক ভরে নিই শহরের ঘ্রাণ
হৃদয়ে মেঠো পথ, ফলের বাগান।)

তওফিক বাআন্দাযা য়ে হিম্মত হ্যায় আযল সে

আঁখো মেঁ হ্যায় ও কাতরা জো গওহর না হুয়া থা ।

যে বৃষ্টিকনা ফলালো সোনার ফসল সেই কি মূল্যবান ?

যে জলকণা হৃদয় ভেজালো সে অশ্রু মুক্তোর সমান ।।

পাত্তা পাত্তা বুটা বুটা হাল হামারা জানে হ্যাঁয়

জানে না জানে গুল হি না জানে বাগ তো সারা জানে হ্যায় ।

প্রত্যেকটা পাতা প্রতিটা অঙ্কুর জানে আমার হাল 

সারা বাগান জানে, শুধু সেই ফুলই জানল না কোনওকাল ।

কিঁউ জ্বল গ্যায়া না তাবে রুখে য়ার দেখ কর

জ্বলতা হু আপনি তাকতে দিদার দেখ কর

প্রিয়ার রূপের বিভায় যদি পুড়ে ছাই না হতে পারি

তবে নিজের দৃষ্টির শক্তিতে যেন নিজেই জ্বলে মরি!

ফির তেরে কুচে কো জাতা হ্যায় খায়াল

দিলে গুমগশতা মাগার য়াদ আয়া ।

ভাবনা কেবল তোমার গলিতে যেতে চায়

হারানো হৃদয় ফেলে এসেছি তোমার আঙিনায় ।

ইন আবলো সে পাঁও কে ঘাবরা গ্যায়া থা ম্যায়

জি খুশ হুয়া হ্যায় রাহ কো পুরখার দেখ কর

পায়ের এই ফোস্কা দেখে পেয়েছিনু ভয় 

হায় ! পথ ভর্তি কাঁটা দেখে মন খুশি হয় ।

ঘর জাব বানা লিয়া তেরে দর পর কহে বাগ্যয়র

জানেগা আব ভি তু না মেরা ঘর কহে বাগ্যয়র

তোমার দুয়ারে বসতি করেছি তোমাতেই ভরপুর 

ঠিকানা আমার অজানা নয় প্রিয় তবু কেন এতদূর ।

দর্দ মিন্নতশে দাওয়া না হুয়া

হাম না আচ্ছা হুয়ে বুরা না হুয়া ।

বেদনা নিদানের জন্য মিনতি করিনি 

আমি ভালো হলাম না, মন্দ তো হইনি ।

জান দি দি হুয়ি উসি কি থি

হক তো য়ে হ্যায় কি হক আদা না হুয়া ।

যে প্রাণ দিলাম তোমায় সে তো তোমা হতে পাই

তোমাকে যে কিছু দেব সে স্পর্ধা আমার নাই ।

সিনে কা দাগ হ্যায় ও নালা কি লব তক না গ্যায়া

খাক কা রিযক হ্যায় ও কাতরা কি দরিয়া না হুয়া

যে আর্তনাদ ঠোঁটে এলো না সে বুকে দাগ কেটে বসে

যে জলবিন্দু নদীতে পৌঁছলো না মাটি তাকে নেয় শুষে ।

১০

হাম্ হ্যায় মুস্তাক ওউর ওহ্ ভি বে-জার

ইয়া ইলাহি এ মজরা ক্যা হ্যায় !

আমি যত এগিয়ে চলি সে থাকে না আর কাছে

ঈশ্বরই জানেন, তাঁকে ছুঁতে চাওয়া মরীচিকার পিছে ।

১১

আয়না দেখ আপনা সা মুহ লে কে র‌্যহ গ্যয়া

সাহিব কো দিল না দেনে পে কিৎনা গুরুর থা ।

আয়নার দিকে চেয়ে খুব না দেমাক ছিল ?

তবে প্রেমিকের কাছে কীভাবে হৃদয় হারালো !!

১২

হামকো মালুম হ্যায় জান্নাত কি হক্বিকৎ লেকিন

দিল কে খুশ রাখনে কো গালিব ইয়ে খ্যয়াল আচ্ছা হ্যায়।

আমাদের জানা আছে স্বর্গটা আসলে কেমন 

নেহাত মন্দ না , যদি এতেই খুশি হয়ে যায় মন !

১৩

এক গম আহ কী তো হাজারোকে ঘর জ্বলে

রুখতে হ্যায় ইশকমে এহ অসর হম জিগর জ্বলে।

বেদনা অনলে যখন পুড়ে যায় হাজারো মঞ্জিল 

পোড়েনা কেবল সেই প্রেমিক যে হারিয়েছে দিল ।

অথবা

বেদনা অনলে যখন হাজারো ঘর জ্বলে,

তখন উদাসীন থাকে সেই প্রেমিক 

যার হৃদয় পুড়েছে প্রেমানলে।

১৪

ইশরতে কাতরা হ্যায় দরিয়ামে ফানা হো যানা

দরদকা হদসে গুজরনি হ্যায় দাওয়া হো যানা।

জলের ফোঁটা তুমি, মিশে যাও সাগরের ঢেউয়ে 

নয়তো এক ফোঁটা ওষুধ হয়ে যেও ব্যথা নিরাময়ে ।

১৫

নাদান হো জো ক্যাহতে হো কিঁউ জিতে হো গালিব

মুঝ কো তো হ্যায় মরনে কি তামান্না কোই দিন অওর

কেন বেঁচে আছো ? এই প্রশ্ন নিতান্তই অবান্তর 

মৃত্যুর বাসনা নিয়ে থেকে যাব আরো কয়েকটি বছর ।

১৬

হাম নে মহব্বত কে নেশে মে আ কর উসসে খুদা বানা ভালা

হুঁস তব আয়া যব উসনে কাহা কে খুদা কিসি এক কা নেহি হোতা ।

আমি ভালোবাসার নেশায় তাকে দিয়েছি দেবীর মহিমা 

হুঁস তো তখন এলো যখন জানলাম দেবী কারো একার না !

১৭

হ্যায় মুঝে আবরে বাহারি কা বরস কর খুলনা

রোতে রোতে গমে ফুরকত মে ফানা হো জানা ।

বসন্ত মেঘের বর্ষণ শেষে উন্মুক্ত আকাশ 

যেন বিরহ বেদনার অশ্রুতে ভেজা আমার দীর্ঘশ্বাস ।

১৮

গ্বম-এ হস্তি কা আসাদ কিস সে হো জুয মার্গ ইলাজ

শম্মা হর রঙ্গ মে জ্বলতি হ্যায় শ্যহর হোতে তক

মৃত্যু ছাড়া আর কীসেই বা পরিত্রাণ মেলে

মোম পুড়ে যায় সারা রাত ভোর পাবে বলে ।

১৯

হাজারোঁ খাহিশে এ্যয়সে কে হর খাহিশপে দম নিকলে

বহত নিক্লে মেরে আরমাঁ লেকিন ফিরভি কম নিকলে

হাজারো বাসনা পাপড়ি মেলে মনে সবকটিই প্রাণহরা

মিটেছে অনেক কিছুই তবুও কিছু রয়ে যায় অধরা ।

২০

জান তুম পর নিশার করতা হু

ম্যায় নহী জানতা দুআ ক্যা হ্যায় ।

এ জীবন মন তোমাকেই দিয়েছি ঢেলে

আমি তো বুঝিনা আদৌ প্রার্থনা কাকে বলে ।

২১

কিতনা খউফ্ হোতা হ্যায় সাম কে অন্ধেরেমে 

পুছ উন পরিন্দোসে জিনকে ঘর নেহি হোতে ।

নির্জন সন্ধ্যার অন্ধকারে মনে যদি জাগে ডর

তবে জেনে নিও সেই পাখিটির কাছে 

যার ফেরার ছিল না কোনো ঘর ।

২২

সও বার বন্দ্-এ-ঈশক্ সে আজাদ হম্ হুয়ে

পর ক্যা করে কে দিল হি উদ্ হ্যায় ফরাগ কা ।

শতবার প্রেমের বন্ধন থেকে মুক্ত হয়েছি মানি

কিন্তু হায় ! অবুঝ এ হৃদয় স্বাধীনতা বোঝেনি ।

২৩

হাল -এ- দিল্ নহী মালুম লেকিন ইস্ কদর য়ানী

হম্ নে বারহা ঢুন্ডা , তুমনে বারহা পায়া ।

বুঝিনা হৃদয়ের হাল , শুধু এটুকুই মানি

সারা জীবন খুঁজিলাম , কুড়িয়ে পেলে তুমি ।

২৪

রগোঁ মে দৌড়নে ফিরনে কী হম্ নহী কায়ল

যব আঁখ সে হি ন টপকা , তো ফির লহু কেয়া হ্যায় ।

রক্ত কী কেবল প্রবাহিত স্রোত শিরা উপশিরায় ?

সে রক্ত তবে মূল্যহীন যদি তা চোখে না গড়ায় ।

২৫

অব্ ম্যায় হুঁ অওর মাতম্ এক শহর-এ-আরজু 

তোড়া যো তুনে আইনা , তিমসালদার থা ।

এক শহর আশায় আমি নিয়েছি শোকের সাজ

যে আয়না ভেঙে দিলে তাতে ছিল কত না কোলাজ।

২৬

চিপক্ রহা হ্যায় বদন পর লহু সে প্যায়রাহন্

হমারে জেব কো অব্ হাজত-এ-রফু কেয়া হ্যায় ?

জড়িয়ে আছ দেহমনে শিরা উপশিরার বন্ধন

মিথ্যে কর পকেট সেলাই বৃথা আয়োজন ।

২৭

দিল-এ-নাদাঁ তুঝে হুয়া কেয়া হ্যায় 

আঁখির ইস্ দর্দ কী দবা কেয়া হ্যায় ।

ওরে অবুঝ মন উতলা কেন আজ

কেউ কী দিতে পারে এ ব্যথার ইলাজ ?

২৮

জী ঢুন্ডতা হ্যায় ফির বহী ফুরসৎ কে রাত দিন

বৈঠে রহে তসব্রবুর-এ-জানা কিয়ে হুয়ে ।

খুঁজে ফেরে এ হৃদয় ফেলে আসা পুরনো ক্যানভাসে 

বসে ভাবি দিনরাত প্রিয় মুখ ভেসে আসে ।

২৯

বেদাদ-এ-ঈশক্ সে নহী ডরতা , মগর অসদ্

জিস্ দিল্ পে নাজ থা মুঝে , উয়ো দিল্ নহী রহা ।

প্রেমের অবিচারে পাইনা কোনো ভয় , কিন্তু হায় 

রইলো না যে আমার সেই অহংকারী গর্বিত হৃদয় ।

৩০

লাগ্ হো তো উস্ কো হম্ সমঝেঁ লগাও

যব না হো কুছ্ ভি , তো ধোঁকা খায়েঁ কেয়া ?

শত্রুতা থাকলে বুঝি আকর্ষণও আছে

যদি কিছুই না থাকে তবে সম্পর্কটাই মিছে ।

৩১

লরযতা হ্যায় মেরা দিল য্যাহমতে মেহরে দরখশা দেখ কর

ম্যায় হু ও কাতরায়ে শবনম কি হো খারে বাঁয়াবা পর ।

উদার সুর্যের কষ্ট দেখে আমার হৃদয় কেন অস্থির ?

আমি যে মরুর বুকে কাঁটার ওপর পড়া সামান্য শিশির !

৩২

মুহব্বৎ মে নহী হ্যায় ফর্ক্ জীনে অওর মরনে কা

উসীকো দেখ্কর জীতে হ্যাঁয় জিস্ কাফির পে দম্ নিকলে ।

ভালবাসায় আছে কি ফারাক ? জীবন মরন মাঝে 

তাকে দেখেই বাঁচতে হবে , যে হৃদয় ভেঙেছে ।

৩৩

দাগ্-এ-দিল গর নজর নহী আতা

ওহ্ ভি অ্যায়ে চারহ্ গর নহী আতি ।

দগ্ধ হৃদয় যদি নজর না টানে

একটুখানি থেমো জ্বলে যাবার ঘ্রাণে ।

৩৪

আতস্-এ-দোজখ্ মে য়ে গর্মি কহাঁ

সোজ-এ-গম্ হায় নিহানী অওর হ্যায় ।

আছে কি সেই উষ্ণতা নরক আগুনে ?

পুড়েছি যে তাপে গভীর গোপনে ।

৩৫

দিল্ সে তেরী নিগাহ্ জিগর তক্ উতর গঈ

দোনোঁ কো এক আদা মে রজামন্দ্ কর গঈ ।

মন থেকে তোমার দৃষ্টি হৃদয় ছুঁয়েছে 

দুজনায় একসাথ ‘ কবুল ‘ করেছে ।

৩৬

মওত্ কী রাহ্ ন দেখুঁ ? কে বিন্ আয়ে ন রহে

তুমকো চাহুঁ ? কে না আও তো বুলায়ে ন বনে ।

মৃত্যুর পথের দিকে দেখব ? সে তো না এসে পারবে না ।

তোমার পথেই চেয়ে রই , যাকে ডাকলেও আসে না ।

৩৭

জানতা হুঁ সোয়াব্-এ-তায়ৎ ব্ জুহদ্

পর তবিয়ৎ ইধর নহী আতি ।

প্রার্থনা, অনুশোচনা একমাত্র পথ , সেটা জানি

কিন্তু অবুঝ এ মন সে পথে চলতে শেখেনি ।

৩৮

দেকে খৎ মুঁহ দেখ্তা হ্যায় নামেবর

কুছ তো পয়গাম-এ-জবানী অওর হ্যায় ।

চিঠি দিয়ে কি এতো দেখো মুখ পানে

গোপন কথাটি আর রইল না গোপনে ।

৩৯

সর বহি তো আস্তাঁ হ্যায় বহি

জান বহি তো জান-এ-জাঁ হ্যায় বহি ।

শির থাকলে শিরোস্ত্রান তার ওপরেই সাজে

হৃদয় যখন আছে হৃদয়েশ্বরী সেখানেই বিরাজে ।

৪০

আশিকী সব্র তলব্ অওর তমন্না বেতাব্

দিল্ কা কেয়া রঙ্গ্ করুঁ খুন-জিগর হোনে তক্ ।

প্রেম তো পিয়াসী আর বাসনা অধীর

হৃদয়ের রঙ কী ? যদি না হয় রুধির ।

৪১ 

তা ফির ন ইন্তেজার মে নিন্দ্ আয়ে উম্রভর

আনে কা অহদ্ কর গয়েআয়ে যো খোয়াব মে ।

অপেক্ষায় অপেক্ষায় ঘুম আসেনা কোনও রাতে

আসার শপথ করেছে সে আমার কল্পনাতে ।

৪২

গালিব ছুটি শরাব পর ভি কভি কভি

পীতা হুঁ রোজ-এ-অবর ব্ শব-এ-মাহ্তাব্ মে ।

গালিব, ছেড়েছো শরাব তবু কখনও কখনও 

মেঘলা দিন চাঁদনি রাতে আসর জমিও ।

৪৩

না থা কুছ, তো খুদা থা,কুছ না হোতা, তো খুদা হোতা;

ডুবোঁয়া মুঝকো হোনে নে,না হোতা ম্যায়, তো ক্যায়া হোতা

যখন কিছুই ছিল না, ঈশ্বর ছিল

কোনো কিছু না হলেও ঈশ্বর হতো।

ডুবিয়েছে সবকিছু আমার এই আমি—

যদি আমি না’ হতাম— কীই বা হতো!

৪৪

এক এক  কতরে কা মুঝে দেনা পড়া হিসাব

খুন-এ-জিগর বদিয়ত্-এ-মিজগান্-এ য়ার থা ।

প্রতিটি রক্ত বিন্দুই ছিল আমার হিসেবে 

শুধু রক্তিম হৃদয় ছিল বাঁধা তোমার আঁখি পল্লবে ।

৪৫

জিন্দেগী অপনি যব ইস্ শকল্ সে গুজরী গালিব 

হম্ ভি কেয়া ইয়াদ্ করেঁ কে খুদা রখ্তে থে ।

জীবন যদি মোর এভাবেই কাটলো

কীকরে যে বলি, ঈশ্বর রেখেছিলো ।

৪৬

গো হাথ্মে জুমবিশ নহী আঁখো মে তো দম্ হ্যায় 

রহনে দো অভি সাগর ওহ্ মীনা মেরে আগে ।

হাতে আমার না থাক স্পন্দন, চোখে তো আছে প্রান

সাজিয়ে রেখো রঙিন পেয়ালা, আঁখিপটে অনুপান ।

৪৭ 

হোতা হ্যায় নিহাঁ গর্দ্ মে সাহারা মেরে হোতে

ঘিসতা হ্যায়  জবিন খাক্ পে দরিয়া মেরে আগে ।

যেমনে মরুভূমি বালুতে মুখ ঢাকে

তেমনে লুকায় নদী তৃযিত আমারে দেখে ।

৪৮

উনকো দেখে সে যো আ যাতী হ্যায় মুঁহ্ পর রৌনক্

উয়ো সমঝ্তে হ্যায় কে বীমার কা হাল অচ্ছা হ্যায় । 

তুমি এলে আমার মুখে ঝলমলে রোদ্দুর 

ভেবে নাও আমার অসুখেরা বুঝি চলে গেছে বহুদূর ।

৪৯

চলতা হুঁ থোড়ী দুর হর এক তেজ রও কে সাথ্

পহচানতা নহী হুঁ অভি রাহবর কো ম্যায় ।

দ্রুতলয়ে এগিয়ে চলি জীবনের কিছুটা পথ 

এখনও হোল না চেনা কে আমার পথ প্রদর্শক ।

৫০

‘রাত-দিন গর্দিশ মে হ্যায় সাত আসমা,

হো রহেগা কুছ না কুছ ঘাবড়ায়ে কেয়া’

রাত-দিন আবর্তনে আছে সাত আসমান

ঘাবড়ে কী লাভ ! জীবন তো বহমান ।

৫১

মাঙ্গে হ্যায় ফির কিসিকো লবে বাম পর হুওবস্

জুলফে সিয়াহ্ রুখপে পরেশাঁ কিয়ে হুয়ে ।

মন চায় কারুকে আবার ঠোঁটের কোণে জমে থাকা কামনায়

‘ চুল তার কবেকার অন্ধকার ‘ ঝরে পড়ে উচ্ছসিত চন্দ্রিমায় ।

৫২

বিজলী ইক্ কৌন গই আঁখোকে আগেতো ক্যা 

বাত করতে কি ম্যায় লব-এ-তিশনা তকরীর ভী থা ।

তুমি হেঁটে গেলে রুপের বিভায় চোখে বিজলী চমকায়

অধরে লেগে থাকে তৃষা একান্তে কথা বলি দুজনায় ।

৫৩

দিল্ হি তো হ্যায় না সঙ্গো-খিশু দর্দসে ভরনা যায়ে কিঁউ 

রোয়েঙ্গে হম্ হজারবার কোই হমে সতায়ে কিঁউ ?

এ তো একটা হৃদয় ; পাথর তো নয় !

বেদনায় ভরে উঠবেনা  কেন ?

কাঁদতে পারি আমি হাজার বার

কিন্তু কেউ কাঁদাবে কেন ?

৫৪

দিয়া হ্যায় দিল অগর উসীকো , বশর হ্যায় ক্যা কহিয়ে

হুয়া রকীব তো হো , নামাবর হ্যায় ক্যা কহিয়ে ।

দিয়েছে হৃদয় সে আমার প্রিয়াকে , যদিও দূত পরিচয় 

কী আর বলব তাকে , তারও ছিল এক প্রেমিক হৃদয় ।

৫৫

ম্যায়নে মানা কি , কুছ নহীঁ গালিব

মুখ্ত হাথ্ আয়ে , তো বুরা ক্যা হ্যায় ।

মানি , আমার এ হৃদয় মূল্যহীন যেন

তবুও যা দিচ্ছি বিনামূল্যে , তা নেয় না কেন ?

৫৬

করতা হুঁ জমা ফির জিগর-লখত-লখত কর

অরসা হুয়া হ্যায় দাবত-এ-মিজগাঁ কিয়ে হুয়ে ।

টুকরো টুকরো ভাঙা হৃদয় জুড়েছি আবার এ কোন দুরাশায়

প্রত্যাশি প্রেম , কবে পাব আমন্ত্রণ তোমার আঁখি পল্লব ইশারায় ।

৫৭

ম্যায় নামুরাদ দিলকি তসল্লী ক্যা করুঁ

মানা, কি তেরি রুখসে নিগহ্ কাময়াব হ্যায় ।

হায়রে হতভাগা মন , কী আছে সান্ত্বনা তোর ?

ধন্য এ চোখ তার রুপসুধায় হয়েছে বিভোর ।

৫৮

থা খোয়াবমে খয়ালকো তুঝসে মুয়ামলা ,

যব আঁখি খুল গই না জিয়াঁ থা না সুদ থা ।

সে ছিল আমার স্বপ্নের কোজাগরী 

না থাকে লাভ না লোকসান যখনই চোখ মেলি ।

৫৯

করে হ্যায় কতল লখাবটমে তেরা রো দেনা

তেরী তরহা কোই তেগ-এ-নিগহ্কো আব তো দো ।

ভালবাসার অশ্রুজল বিদীর্ণ করে হৃদয় বারবার 

ছলছল চোখ শানিত তরবারি কম নয় ক্ষুরধার ।

৬০

জঁহা তেরা নকশ্-এ-কদম দেখতে হ্যায়

খোঁয়াবা খোঁয়াবা ইলম্ দেখতে হ্যায় ।

তুমি যে পথে যাও চলে সেটাই তো স্বর্গোদ্যান

ফুটে ওঠা পারিজাত পদচিহ্নে রাখে প্রমাণ ।

৬১

নজর লগে না কঁহি উসকো দন্তো-বাজু কো

ইয়ে লোগ কিঁউ মেরে জখমে জিগর কো দেখতে হ্যায় ।

সবার নজর কেন লাগে 

তোমার সুগঠিত বাহু আর দেহের ভঙ্গিমায় !

তাদের চোখ পড়েনা কেন ?

আমার আহত মন আর বেদনার্ত কলিজায় ।

৬২

মেহেরবাঁ হোকে বুলা লো মুঝে চাহো মিস বকত্

ম্যায় গয়া বকত্ নহীঁ হুঁ কে ফির আভী না সকুঁ ।

দয়া করে আমাকে ডেকে নিও যেকোনো সময় 

কবিতা-আড্ডা-জলসায় ।

আমি তো বিগত সময় নই

ফিরে আসতে পারব না তোমাদের জমানায় !

৬৩

তুম্ অপনে শিকবেকী বাতে না খোদ্ খোদকে পুঁছো

হজর করো মেরি দিল্ সে , কি ইসমে আগ্ দবী হ্যায় ।

তুমি সব অভিযোগের উত্তর খুঁজতে যেয়ো না হৃদয় খুঁড়ে 

তুষের আগুন আজও ধিকি ধিকি জ্বলে ছাই চাপা পড়ে ।

৬৪

সায়া মেরা মুঝসে মিস্লে-দূদ্ ভাগে হ্যায় ‘অসদ্’

পাস্ মুঝ আতিস বজাঁকে কিসসে ঠহরা ভাগে হ্যায় ।

যে ছিল আমার ছায়া , সরে যায় ধীরে ধীরে 

মন পাখি বোবা চোখে পুড়ে যায় কুরে কুরে ।

৬৫

কসম্ মেরে জনাজাপে আয়েকী , মেরে খাতে হ্যায় “গালিব “

হামেশা খাতে থে জো , মেরি জান কী কসম্ আগে ।

শপথ করেছো বহুবার আমার নামে , সেটা মানিও

শবাধার পাশে তাই একবার আসিও ।

৬৬ 

যাতে হুয়ে কহতে হো কায়ামত্ কো মিলেঙ্গে

ক্যা খুব কায়ামত্ কা হ্যায় গয়া কোই অওর ।

যাওয়ার সময় বলেছিলে , দেখা হবে আবার শেষ বিচারের দিনে

তবে তো পাবো সুযোগ , হবে মোলাকাত আরো একবার দুজনার সনে ।

৬৭

দিল্ সে নিকলা পর ন নিকলা দিলসে

হ্যায় তেরা তীর কা পৈকান অজীজ – ।

হৃদয় চিরে বেরিয়ে গেল তবুও হৃদয়েই থেকে গেলে

তীরের ফলাটি বড় প্রিয় হৃদয় রাঙিয়ে গেলে ।

৬৮

লাজিম্ থা কি দেখো মিরা রস্তা কোই দিন অওর

তনহা গয়ে কিঁউ অব রহো তনহা কোই দিন অওর ।

উচিত কি ছিলনা তোমার ? কিছুদিন রয়ে যেতে আরও 

একলা চলে গেলে – আরও কিছুদিন একলাই মেনে নিও ।

৬৯

বু-এ-গুল , নালা-এ-দিল , দুদে চিরাগ-এ-মহফিল

যো তেরি বজমসে নিকলা সো পরিশাঁ নিকলা ।

ফুলের সুগন্ধ , হৃদয়ের শ্বাস আর মহফিল রোশনাই 

তোমার আঙিনা ছাড়া দিগভ্রান্ত হয়ে যাই ।

৭০

গুচাঁ ফির লগা খিলনে আজ হমনে আপনা দিল

খুঁ কিয়া হুয়া দেখা গুম কিয়া হুয়া পায়া ।

সুন্দরী কলিরা ফুটল আবার , হৃদয়ে পলাশ রাঙালো

আমি দেখলাম ; ভালোবাসলাম , ভালবাসায় হারিয়ে গেলাম ।

৭১

ইশক্ পর জোর নহীঁ; হৈ য়েহ্ বোহ্ আতশ,গালিব,

জো লগায়ে নহ্ লগে, অওর বুঝায়ে নহ্ বুঝে।।

প্রেমের উপর জোর খাটে না মোটেই , এ সেই আগুন

যা জ্বালালে জ্বলে না,নেভালে নেভে না , এ যেন এক খেয়ালি-ফাগুন ।

৭২

আঁখ কি তসবীর সরমানেপে খেঁচি হ্যায়, কি তা

তুম পে খুল জাবে কি ইসকো হসরতে দীদার হ্যায় ।

লজ্জা তোমার চোখের পাতায় এঁকেছি মানসপটে

তুমি কি বোঝনা প্রেম সে ছবি দেখে দিনে রাতে ।

৭৩

হম্ থে মরনে কো খড়ে পাস না আয়া সহী ,

আখির উস্ শোখকে তরকসমে কোই তির ভী থা ।

প্রান দেব প্রেমে এই সাধ ছিল মনে

সুযোগ যদি পাই

বিবশ হয়ে যাই

চঞ্চলা রূপসীর কটাক্ষ বানে ।

৭৪

রওনক্-এ-হস্তী হই ইশক্ এ খানহ্ ও বীরানহ্ সাজ সে

আঞ্জুমান বেশমা হই গর বক্ পীরমন মেঁ নহী

যে প্রেম বাঁধে ঘর কেড়ে নেয় নগর সেই মূল্যবান

ধানের গোলায় লাগলে আগুন মজলিস শুনশান ।।

৭৫

রোদ মে হৈ রখস্-এ-উমর , কড়া দেখিয়ে থামে

নে হাথ্ বাগ পর হৈ , নহ্ পা হৈ রকাব মে ।।

জীবনের ঘোড়া চলেছে ছুটে , না জানি কোথায় থামবে

আমার হাতে নেইকো লাগাম , না পা আছে রেকাবে ।

৭৬

বুলবুল কে কারোবার মে হৈ ন্দেহা-এ-গুল

কহতে হৈ জিসকো ইশক্, গলদ হৈ দিমাগ কা।।

বুলবুলের কান্ড দেখে ফুল হেসে একাকার

যাকে আমরা প্রেম ভাবি সেটা মস্তিষ্ক বিকার ।।

৭৭

খুলতা কীসি পে কিউ মেরে দিল কা মুআমিলহ্

শেরো কে ইন্তেখাব মে রুসবা কিয়া মুঝে ।

কেই বা জানতো আমার হৃদয় ব্যারাম

কী-কুক্ষনেই যে আমি কবি হতে গেলাম ।।

৭৮

হৈ জবাল আমাদহ্ অজজা আফরীনশকে তামাম 

মহর-এ-গরদূ হৈ চীরাগ এ রাহ গুজর এ বাদিয়া ।

সৃষ্টির প্রতিটি অঙ্গই তো ধ্বংসোন্মুখ

ঝোড়ো হাওয়ায় ধরা একটি প্রদীপ -ক্ষনিকের সুখ ।

৭৯

বাগ পা কর খপকানী , ওহ্ ডরাতা হ্যায় মুঝে

সায়া -এ-শাখ-এ-গুল অফ’ ই নজর আতা হ্যায় মুঝে।

তার প্রেমে পাগল আমি বাগিচাও ভয় দেখায়

সাপ ভেবে শিউরে উঠি সুবাসিত ফুলের ছায়ায়।

৮০

আইনা কিউ না দু কি তমাসা কহে জিসে

এইসা কহা সে লাউ কি তুঝসা লয়ে জিসে

তোমার রুপের প্রতিদ্বন্দ্বী তোমার চোখে চোখ রাখে,

বাম কে গান, ডান কে বাম করা সে জন আয়নায় ধরা থাকে।

৮১

নগমহ্ হৈ মহব্বত -এ-সাজ রহ্ নশহ্ হৈ বেনিয়াজ রহ্

রিন্দ্-এ-তমাম্ এ না রহ্ খলক কো পারসা সমঝো ।

সুর আছে ভেসে যাও তার স্রোতে

সুরা আছে ভুলে যাও সব ক্ষত

রূপ আছে মজে যাও তার রূপে

সাধুতা থাক সাধু পুরুষের মত ।

৮২

তেরে ওয়াদে পর জীয়ে হম্ , তো ইয়ে জান ঝুট জানা

কে খুশিসে মরনা যাতে , অগর একবার হোতা ।

বেঁচে আছি তোর প্রতিশ্রুতিতে

আমার প্রান আজ তাই মিথ্যে

হয়তো মরেই যেতাম সুখে

যদি পারতাম ভরসা রাখতে ।

৮৩

বেতলব দে তো মজা উসমে সিবা মিলতে হৈ

বোহ্ গদা জিস্ কো নহ্ হো খু-এ-সবাল অচ্ছা হৈ ।

না চাইতেই তুমি যা দিয়েছ উজাড় করে

সেই তো অমৃত !

কোনও দিন  হাত পাতার অভ্যাসই হলনা যার 

সেই ভিখারীই শ্রেষ্ঠ ।।

৮৪

হয়্ ভী তসলীম কী খু ভালেঙ্গে

বেনিয়াজি তেরী আদৎ হী সহী ।

সব মেনে নিতে পারি আমিও

উদাসীনতাই যদি তোমার অভ্যাস হয় জানিও ।

৮৫

গিলহ্ হৈ শওক কো দিল মেঁ ভী তঙ্গী-এ-জা কা

গৌহর মেঁ মহব্ হুয়া ইজতরাব দরিয়া কা ।।

অফুরন্ত বাসনা করে হৃদয় মুখর

উত্তাল সমুদ্র ধরা মোতির ভেতর।।

৮৬

মহরম্ নহীঁ হৈ তু-হী নবাহা-এ-রাজ কা

য়াঁ বরনহ্ জো হিজাব হৈ, পর্দ হৈ সাজ কা ।

তোমার রসবোধে ধরা দেয়না অনন্ত রহস্যের বিচিত্র সব রাগ

নইলে রহস্যের আবরন ? সে তো সুরের ঝরনা ধারায় প্রকৃতির প্রেমালাপ ।।

৮৭

রশক্ কহতা হৈ -উসকা গৈর সে ইথলাস , হৈফ্

অকল্ কহতী হৈ- কেহ্ বোহ্ বেমেহের কিস-কা আশনা ।

ঈর্ষা বলে, অন্যের সাথেই তার হৃদ্যতা

বুদ্ধি বলে, সে হৃদয়হীনা পেতে পারেনা কারো মান্যতা।

৮৮

চুপকে চুপকে মুঝকো রোতে দেখ্ পাতা হ্যয় অ্যগ্যর হ্যঁসকে ক্যরতে হ্যয় ব্যয়ান্-এ শওখি-এ গুফ্তার-এ দোস্ত ।

চুপি চুপি এসে যদি দেখতে আমার কান্না ;

তবে দেখতে, হাসতে হাসতে লিখছি বয়ান 

করছি কেবল ছলনা।

৮৯

ইশক্ সে তবীয়তনে জীন্ত কা মজা পায়া

দর্দ কী দবা পাই , দর্দ কে বে-দবা পায়া ।

ভালবাসায় পেলাম জীবনের মজা আর সাহারা বেদনার 

কিন্তু হায় ! হৃদয় ভেঙে গেলে মেলে না ঔষধ সে ব্যথা ভোলাবার ।।

৯০

বে দর বহ্ দীওয়ার সি এক ঘর বনায়া চাহিয়ে

কোই হমসায়া ন হো অওর পসবাঁ না হো

দেওয়াল নেই দরজা নেই বানাব আমার বাড়ি 

পাড়া নেই পড়শি নেই, নেই নজরদারি ।

৯১

“উমর ভার গালিব ওহি গালতি করতা রাহা

ধুল চেহরে পর থি ওর আয়না সাফ করতা রাহা।”

জীবনভর শুধু একই ভুল করে গেলাম 

চেহারায় ছিল ধুলো, আয়না মুছে গেলাম ।।

৯২

“করয কি পিতে থে ম্যায় লেকিন সমঝতে থে কি হাঁ,

রঙ লায়েগি হামারি ফাকা-মস্তি এক দিন।”

ধার করে খেয়েছি সরাব এ কথাটা সত্য 

হোক্ না প্রতিকূল তবুও উচ্ছাসে রঙিন প্রতিপাদ্য ।

৯৩

“আপনি নশিলী নিগাহো কো জারা ঝুঁকা দিজিয়ে, জনাব,

মেরা মাজহাব মে নেশা হারাম হ্যায়।”

নামিয়ে নাও চোখ নেশাতুর দৃষ্টি 

ধর্মে লাগবে পাপ একথা বোঝো না কী ?

৯৪

“থোড়ি সি পী শরাব, থোড়ি সী উছাল দি,

কুচ ইস তরহ সে হামনে জওয়ানি নিকাল দি।”

পান করেছি শরাব সামান্য , ছলকে পড়েছে কিছু কম

এভাবেই কাটিয়েছি আমি ফেলে আসা বিগত যৌবন ।

৯৫

নাদাঁ হো যো কহতে হো কে কিয়ৌঁ জিতে হ্যায় গালিব

কিস্মত যো হ্যায় মরণে কি তমান্না কোঈ দিন অওর ।

অবুঝ লোকেরা বলে, গালিব কেন বেঁচে এখনও 

ভাগ্যে রয়েছে বাঁচার ইচ্ছে কিছুদিন আরও 

৯৬

মুঝসে তুমহে নফরত সহী নয়ইর সে লড়াই 

বচ্চোঁ কা ভি দেখা না তমাশা কোঈ দিন অওর ।

আমাকে ঘৃণ্য কর, তাই ? সে তো সূর্যের সাথে লড়াই 

শিশুদের তামাশা না হয় আরও কিছুকাল দেখে যাই ।

৯৭

তুম্ মাহ্-এ-শব্-এ-চার্ রহম থে মেরে ঘর কে

ফির কিঁউ ন রহা ঘর কা উয়ো নকশা কোঈ দিন অওর ।

তুই ছিলি মোর ঘরের জ্যোতি আঁধার ঘরে আলো 

রইল না কেন সেই শোভা ঘরে আরো কিছুদিন বলো ।

৯৮

বাজিচা-এ-ইতফাল হ্যায় দুনিয়া মেরে আগে 

হোতা হ্যায় শক্-এ-রোজ তমাশা মেরে আগে ।

এ জগৎ শিশুদের খেলাঘর মানিও

রাতদিন এখানে চলছে তামাশা দেখিও ।

৯৯

কবসে হুঁ কেয়া বতাউঁ জহান-এ-খরাব্ মে

শব্ হ্যায় হিজর কো ভি রখুঁ গর হিসাব মে ।

বহুকাল রয়েছি এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে 

বিচ্ছেদের রাতকেও কি রাখা যায় ? এই গণনাতে ।

১০০

তুম শহরমে হো তো হমেঁ কেয়া গম, যব উঠেঙ্গে 

লে আয়েঙ্গে বাজার সে যাকর কর দিল্ বহ্ জাঁ অওব ।

এই শহরে থাকলে তুমি আমার কোনো দুঃখ না 

বাজার আনবো ভরে প্রেম পিয়াসী হৃদয়খানা ।

১০১ 

আহ্ কো চাহিয়ে এক উম্র অসর হোনে তক্

কৌন জিতা হ্যায় তেরি জুলফ কে সর হোনে তক্ ।

এক দীর্ঘশ্বাসেই সারাটা জীবন কেটে যায় 

কে বেঁচে আছে তোমার ওই রেশমি চুলের মায়ায় ?

১০২

উধর উয়ো বদ্ গুমানী হ্যায়, ইধর ইয়ে না তওয়ানী হ্যায় 

ন পুছা যায়ে হ্যায় উস্ সে , ন বলা যায়ে হ্যায় মুঝসে  ।

তোমার আছে অহংকার আর আমার অক্ষমতা 

তুমি কিছুই বলবে না জানি , আমার নীরবতা ।

১০৩

হমনে মানা কে তগাফুল ন করোগে লেকিন্

খাক্ হো যায়েঙ্গে হম্, তুমকো খবর হোনে তক্ ।

আমি মানি, অবহেলা করবে না কোনওদিন 

হয়তো পুড়ে ছাই হয়ে যাবো বুঝবে তুমি যেদিন ।

১০৪

আজ হম্ অপনী পরেশানী-এ-খাতির উন্ সে

কহনে যাতে তো হ্যায়, পর দেখিয়ে ক্যায়া কহতে হ্যায় ।

আজ যাচ্ছি, নিজের কষ্টের কথা বলতে তোমার নীড়ে

কিন্তু হায়! আসল কথাই হারিয়ে ফেলি অন্য কথার ভীড়ে ।

১০৫

ম্যায়নে চাহা থা কে অন্দোহ-এ-বফা সে ছুটু

উয়ো সিতমগর মেরে মরনে ভি রাজি ন হুয়া ।

চেয়েছিলাম নিষ্কৃতি , অসহ বিশ্বাসের যন্ত্রণা

কিন্তু হায়! সে নিষ্ঠুর আমার মৃত্যুতেও রাজি না ।

১০৬

য়হি হ্যায় আজমানা , তো সতানা কিসকো কহ্তে হ্যায় 

অদু কে হো লিয়ে যব তো মেরা ইমতহাঁ কিঁউ হো ?

এই যদি হয় পরখ তব অত্যাচার তবে কী !!

অন্যের তো হয়েই গেছ, পরীক্ষার আছে কি বাকি ।

১০৭

য়া রব্ উয়ো ন সমঝা হ্যায় ন সমঝেঙ্গে মেরে মেরী বাত্

দে অওর দিল্ উনকো যো ন দে মুঝকো জবাঁ অওর ।

হায় ঈশ্বর, সে বোঝেনা , বুঝবেনা আমার কথা কখনও 

তাকে আরো আরো হৃদয় দাও, নয়তো আমায় ভাষা দিয়ো অন্য ।

১০৮

থক্ থক্ কে হর মকাম্ পে দো চার রহ্ গয়ে

তেরা পতা ন পাঁয়ে তো নাচার কেয়া করে ।

ক্লান্ত আমি, রয়ে যাই দু-চার দিন এখানে ওখানে কোথাও 

তোমার ঠিকানা জানা নেই প্রিয় , আমি অসহায় জানিও ।

১০৯

জানা পড়া রকিব কে দর পর হজার বার 

অ্যায় কাশ্ জানতা ন তেরে রাহ্ গুজর কো ম্যায় ।

যেতে হলো প্রতিপক্ষের দরজায় হাজারবার 

হায় ! যদি না জানতাম তোমার বাড়ির ঠিকানা এবার ।

১১০

য়া রব্ , জমানা মুঝকো মিটাতা হ্যায় কিস্ লিয়ে

লওহ জহাঁ পে হরফ্-এ-মুকরর্ নহী হুঁ ম্যায় ।

হে ঈশ্বর, সময় আমাকে মুছে ফেলতে চায় কেন ?

পৃথিবীর শিলালিপিতে বাড়তি হরফ তো নই !

১১১

ঈশক্ মুঝকো নহী বহশৎ হি সহী

মেরী বহশৎ তেরী শোহরত্ হি সহী ।

ভালবাসা আমার জন্য নয় , সবই পাগলামি ঠিকই 

কিন্তু আমার সে পাগলামি তোমার প্রচার নয় কি ?

সমাপ্ত

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *