বিশ্ববিখ্যাত মার্কিন লেখক মার্ক টোয়েন ছিলেন যেমন রসিক তেমনই বুদ্ধিদীপ্ত কথাবার্তায় অদ্বিতীয়। তাঁর রসিকতা প্রায় সারা বিশ্বেই জনপ্রিয়। তিনি খুব বই পড়তে ভালবাসতেন। একদিন এক বন্ধুর বাড়ি গিয়ে একটা বই ধার চাইলেন কিছুদিনের জন্য। বন্ধু বললেন,
‘বইটা তোমাকে দিতে পারি একটা শর্তে। আমার লাইব্রেরিতে বসেই কেবল বইটা তুমি পড়তে পারো।’
এর কিছুদিন পরে সেই বন্ধুটি টোয়েনের বাড়িতে এসে তাঁর ঘাস কাটার যন্ত্রটি ধার চাইলেন। টোয়েন বললেন,
‘যন্ত্রটা তোমায় দিতে পারি একটা শর্তে। কেবল আমার বাড়ির লনেই তুমি ওটা ব্যবহার করতে পারো।’
.
.
এমজিএম স্টুডিওর সর্বময় কর্তা স্যামুয়েল গোল্ডউইন একদিন জর্জ বার্নার্ড শ-এর কাছে গেলেন। শ-এর বেশ কয়েকটি নাটকের চিত্ররূপ দেওয়ার ইচ্ছে তাঁর। নাটকগুলি ছায়াছবি করার স্বত্ব নিয়ে শ-এর সঙ্গে দীর্ঘসময় কথা বললেন গোল্ডউইন। শর্ত নিয়ে অনেক কথাবার্তার পর শ সন্তুষ্ট হলেন না, সিনেমাস্বত্ব বিক্রি না করার সিদ্ধান্ত নিয়ে বললেন,
‘সমস্যাটা আসলে কোথায় জানেন মিস্টার গোল্ডউইন ? আপনার আগ্রহ কেবল শিল্পে আর আমার আগ্রহ কেবল টাকায়।’
.
.
রাস্তায় হেরম্বচন্দ্রকে জনৈক ভদ্রলোক জিজ্ঞেস করলেন,
‘স্টার থিয়েটারটা কোথায় বলতে পারেন ?’
হেরম্বচন্দ্র বললেন,
‘জানিনা।’
কিছুদূর হাঁটার পর হেরম্বচন্দ্রের মনে হলো মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে। তিনি ফিরে এসে ভদ্রলোককে ডেকে বললেন,
‘স্টার থিয়েটারের কথা জানতে চাইছিলেন তো ? আমি জানি কিন্তু বলব না।’
.
.
নিয়মিত লেখা সম্পাদকদের জমা দেওয়ার ব্যাপারে শরৎচন্দ্রের ছিল প্রবল গড়িমসি। তাঁর কাছ থেকে লেখা আদায়ের ব্যাপারে ভারতবর্ষ পত্রিকার সম্পাদক জলধর সেন ছিলেন সিদ্ধহস্ত। তখন শরৎচন্দ্র বাজে শিবপুরে থাকতেন। উপন্যাসের কিস্তি যাচ্ছেনা বলে জলধর এক ভরদুপুরে শরৎচন্দ্রের বাড়িতে এসে হাজির। লেখা জমা দেওয়ার ব্যাপারে তিনি একটি কথাও বললেন না। দুপুরে বাড়ি আসায় শরৎচন্দ্র জলধরকে খেতে বসালে তিনি বাড়ির গিন্নিকে ডেকে বললেন,
‘রাতের দিকে রুটি কোরো বৌমা, লুচি-টুচি নয়। সে বরং সকালে দেখা যাবে।’
শরৎচন্দ্র তখন বাধ্য হয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
‘কতদিন থাকা হবে দাদা ?’
জলধর বললেন,
‘সে তুমিই জানো।’
বলেই তিনি দিবানিদ্রার তোড়জোড় শুরু করলেন। বেগতিক বুঝে শরৎচন্দ্র তখনই বসে পড়লেন লিখতে। প্রতিভাস ম্যাগাজিন
সংগৃহীত